কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আবারও বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে কয়েক শ নারী-পুরুষ প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেন এবং প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে শহরের যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, ভোগান্তিতে পড়েন অসংখ্য যাত্রী। অবশেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্টের নির্দেশে বাঁকখালী নদীর জমি দখলমুক্ত করতে চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সে অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী কয়েকদিন ধরে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু প্রতিদিনই স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। এর আগে একদিন পুলিশের এক সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মী হামলায় আহত হন।
আরো পড়ুন: ৩০০ সংসদীয় আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি
আজকের অভিযানে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে খননযন্ত্র নিয়ে ৬ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় গেলে স্থানীয়রা সেটি আটকে দেন। এরপর টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ও ঠেলাগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, শুধু অবৈধ স্থাপনা নয়, বৈধ বসতবাড়িও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করেই স্থানীয় পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, অথচ রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারি আশ্রয়শিবির তৈরি করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি জানান, বৈধ স্থাপনা ভাঙা হবে না। যে সব স্থাপনা উচ্ছেদ হবে, সেগুলো আগে লাল নিশানা দিয়ে চিহ্নিত করা হবে। পুলিশ ও প্রশাসনের এ আশ্বাসে অবশেষে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।
বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, বাধা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৪০০–এর বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়নে এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। ইতোমধ্যে দুটি মামলা হয়েছে এবং একাধিক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হঠাৎ উচ্ছেদ অভিযানে গৃহহীন হওয়ার আশঙ্কায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক পরিবার জানাচ্ছে, বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিলে তাঁরা পথে বসবেন। এ অবস্থায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা বেড়েছে।