ছোলার খাদ্যগুণ – ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আজ আমরা ছোলার খাদ্যগুণ নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আমরা বিভিন্ন জনে বিভিন্ন ভাবে ছোলা খেয়ে থাকি। কেউ ভেজানো ছোলা খেতে পছন্দ করেন কেউ আবার মনে করেন যে ভেজানো ছলাকে যদি অংকড়িত করে খাওয়া যায় তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কেউ আবার বালি ভাজা ছলা খেতে পছন্দ করেন কেউ আবার ছলাকে সেদ্ধ করে বা রান্না করে খেতে পছন্দ করেন।

কিন্তু প্রশ্ন হল যে ছোলাকে কিভাবে খেলে তার থেকে ম্যাক্সিমাম হেলথ বেনিফিট আমরা পেতে পারি। এই বিষয়টা নিয়ে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

তার আগে আমরা জেনে নেব ছোলার বেশ কিছু স্বাস্থ্য গুণ বিষয়ে এবং তার সাথে সাথে জেনে নেব একজন সুস্থ মানুষের সারাদিনে কত গ্রাম ছোলা খাওয়া উচিত এবং সবশেষে আমরা জেনে নেব যে ছোলা কাদের জন্য খাওয়া নিরাপদ।

ছোলা এমন ১ ধরনের খাবার এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেলস। তারপর আপনার কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, হাই কোয়ালিটির ডায়েটেরি ফাইবার, হাই কোয়ালিটির প্রোটিন সবে মিলেমিশে ছোলা কিন্তু যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে বিবেচিত হয়।

যে সমস্ত মানুষরা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন অর্থাৎ যাদের ব্লাড জোগাড়ের মাত্রা বেশি রয়েছে। তাদের আমরা তেমন খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকি যে খাবারের মধ্যে ফাইবারের মাত্রা বেশি যে খাবারের মধ্যে প্রোটিন যথেষ্ট মাত্রাই থাকে যে খাবারের গ্রাইসামিক ইনডেক্স কম এবং সেই খাবারের মধ্যে যে কার্বোহাইড্রেট থাকে সে কার্বোহাইড্রেট যদি কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট হয়ে থাকে তাহলে সোনেপে সোহাগা দেখন ছোলা এমন ১ ধরনের খাবার।

যে খাবারটি এই সমস্ত শর্তের পরিপূর্ণ যে বাগায়াটাই সরন্তু শতের সার গুণ ছোলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ছোলার মধ্যে যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। সেটি কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ছোলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হলে আপনার মাত্র 20.8 যেটি কিন লোগান সেমিক ইনডেকা।

যেটি কিন্তু লোপ্পায় সোমক ইনডেক্স এবং তার সাথে সাথে ছোলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে সবে মিলেমিশে ছোলাকে কিন্তু একজন ডায়াবেটিক পেশেন্টের আদর্শ খাবার হিসেবে আমরা মানতে পারি। ছোলার মধ্যে এই সমস্ত গুণাগুণগুলি রয়েছে বলে ছোলা খাওয়ার পরে হঠাৎ করে আমাদের রক্তে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি তো পাই না উপরন্তু আমরা সারাদিনে যে সমস্ত খাবার খেয়ে থাকি সেই খাবারের মধ্যে যে কার্বোহাইড্রেট থাকে সেই কার্বোহাইড্রেট ও কিন্তু সহজে আমাদের 18% শরীরে অ্যাপস অর হতে পারে না।

যেটি একজন ডায়াবেটিক পেশেন্টের জন্য যথেষ্ট লাভদায়ক ছোলার মধ্যে ১ ধরনের কেমিক্যাল কম্পাউন্ড পাওয়া যায় যার নাম হল কলিম। যে কলিম আমাদের ব্রেনে নিউ ট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে।

তার ফলে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষদের মধ্যে আপনার অ্যালজাইমার পার্কিং সেন ডিজিসের মতো সমস্যা হতে দেখতে পাওয়া যায়। যপ সমস্ত বৈধ্যেষ্ঠ মানুষরা নিয়মিত ভাবে ছোলা খেয়ে থাকেন তাদের মধ্যে কিন্তু এই অ্যালজাইমার বা পার্কিং সেন ডিজিসের প্রবণতা অনেকটা কমে যায়। এবং তার সাথে সাথে যদি আপনি নিয়মিত ভাবে ছলা খেতে পারেন এই ছোলার মধ্যে থাকা কলিন আপনার স্মৃতি শক্তি ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

তাই যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা স্মৃতিশক্তি দুর্বলতার মতন সমস্যায় ভুগছেন তারা কিন্তু নিয়মিত ভাবে ছোলা খেতে পারেন। তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য আপনি যদি নিয়মিত ভাবে ছোলা খেতে পারেন।

ছোলা কিন্তু আপনার শরীরের আইরন ব্যালেন্স মেনটেন করতে সাহায্য করে। তার কারণ ছোলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আইরন পাওয়া যায়। এই আইরন যদি দীর্ঘদিন ধরে আপনার শরীরে ঘাটতি হতে থাকে তাহলে কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে গিয়ে অ্যানিমিয়ার মতন সমস্যা রক্তে হিমোগ্লোবিন এর পার্সেন্টেজ কমে যায়।

এই সমস্ত সমস্যা দেখতে পাওয়া যায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারাদিনে যত পরিমাণ আয়রন দরকার হয় তার প্রায় ৭০% আয়রন একশো গ্রাম ছোলার মধ্যে পাওয়া যায়।

তাই যে সমস্ত মানুষরা এনিমির মতন সমস্যায় ভুগছেন যে সমস্ত মায়েরা গর্ভবতী বা যে সমস্ত মায়েরা শিশুদের তল্পান করান তাদের কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ছোলা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ছোলা আমাদের ডাইজেস্টিক সিস্টেমের জন্য বা হজম শক্তি বৃদ্ধের জন্য যথেষ্ট উপকারী।

দেখুন ছোলার মধ্যে ২ ধরনের ফাইবার পাওয়া যায়।ছলার খোসার মধ্যে পাওয়া যায় ইনসলিউবেল ফাইবার এবং ছোলা কলায় এর মধ্যে রয়েছে সলিউবেল ফাইবার। দেখুন ছোলা কলা এর মধ্যে যে সলিউবেল ফাইবার থাকে সে সলিউবেল ফাইবার জলের মধ্যে সহজে মিশে যায় এবং আমাদের ঘাটতির মধ্যে বা আমাদের ডাইজেস্টিক সিস্টেমের মধ্যে গিয়ে জেলির মতন একটা আকার ধারণ করে।

যেটি আমাদের ডাইজেস্টিক সিস্টেমে গুডব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং তার সাথে সাথে আমাদের ঘাটতির মধ্যে যে সমস্ত হারুনফল ব্যাকটেরিয়া বা ব্যাটব্যাকটেরিয়া থাকে সেগুলিকে আমাদের শরীরের বাইরে বের করে দিতে সাহায়া করে।

তার সাথে সাথে ছোলার খোসার মধ্যে যে ইনব্লিউবেল ফাইবার রয়েছে সে ইন চলিউবেল ফাইবার যদি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টেবেশনের মত সমস্যা থাকে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে তাই আমরা সব সমতে বলে থাকি যে ছোলা খোসা সহ খাওয়া উচিত। তার কারণ ছোলার খোসার মধ্যে ইনসালিবেল ফাইবার তো থাকেই এবং তার সাথে সাথে ছোলার খোসার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও পাওয়া যায়।

ছোলা আমাদের হার্টেল ১৩ জন্য কিন্তু যথেষ্ট উপকারী তার কারণ ছোলার মধ্যে প্রচুর পরিমানে সেলে নিয়ম পাওয়া যায়। যে সেলেনিয়াম আমাদের শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতন কাজ করে। আমাদের যে সমস্ত ব্লাড সার্কুলেশনের ব্লাড ভেসেলসগুলি রয়েছে সে ব্লাড ভেসেলসগুলিকে অক্সিজেটি ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে। এবং তার সাথে সাথে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে মায়ও কাঠাইটিস বলে ১ ধরনের হার্টের সমস্যা দেখতে পাওয়া যায় যে হার্টের সমস্যার মধ্যে আমাদের হার্টের মাসেলগুলির মধ্যে ইনফ্লুয়েমিশনের সৃষ্টি হয়।

সেই মায়ওকায়ার্ডিসের মতন সমস্যাও কিন্তু কম করতে সাহায্য করে এই ছোলা এবং যদি আপনি নিয়মিত ভাবে ছোলা খেতে পারেন। এই ছোলা আপনার শরীরে হোম সিস্টেনের লেভেলকে মেইনটেন করতে সাহায্য করে। যে হোমও সিস্টেমে লেভেল যখন মেনটেন থাকে তখন আপনার শরীরে ব্লাড ক্লটের ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায় ব্লাড ক্লর্টের ঝুঁকি কমে গেলে হার্ট এটাকের ঝুঁকিও কিন্তু আপনার অনেক অংশ কমে যায়। এবং তার সাথে সাথে ছোলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড।

যে ফলিক এসিড আমাদের ব্লাড় ভেসেলস গুলিকে ফ্লেক্সিডেল করে রাখতে সাহায্য করে এবং ছলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যে ফাইবার আমাদের রক্ত থেকে এলডিএল বা ব্যাটকলেষ্টারণ এবং ট্রায়মিসরের মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।

সবে মিলেমিশে ছোলা কিন্তু একজন হার্ট পেশেন্টের জন্য যথেষ্ট নিরাপদ খাবার এবং যদি আপনি নিয়মিত ভাবে ছোলা খেতে পারেন তাহলে অনেকখানি আপনি বিভিন্ন প্রকার হার্টের সমস্যার থেকেও দূরে থাকতে পারবেন।

এই সমস্ত উপকারিতাগুলি তো রয়েছে তার সাথে সাথে যদি আপনি নিয়মিত ভাবে ছোলা খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্ত চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ছোলা আপনার চুলের জন্য উপকারী, আপনার চোখের জন্য উপকারী, আপনার ত্বকের জন্য উপকারী।

সিদ্ধ ছোলার উপকারিতা ও অপকারিতা

এখন আমরা জেনে নেব যে ছোলা কোন পদ্ধতিতে খেলে ছোলার ম্যাক্সিমাম হেলথ বেনিফিটস আপনি পেতে পারেন। দেখুন ছোলা আপনি ভেজানো অবস্থাতেই বা সেটিকে আপনি অঙ্কুরিত করে খান বালি ভাজায় খান বা আপনি সেদ্ধ করে বা রান্না করে খান।

প্রত্যেকটি পদ্ধতির নিজস্ব উপকারিতা রয়েছে। যেমন মনে করুন আপনার ভেজানো ছোলার মধ্যে যত পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে সেই ছোলা যখন আপনি অঙ্কুরিত করে ফেলবেন তার পুষ্টিগুণ অনেক অংশে বেড়ে যায়। কিন্তু সেই ছোলাকে যদি আপনি সেদ্ধ করেন বা ছোলাকে যদি আপনি রোস্ট করেন সেক্ষেত্রে কিছু কিছু পুষ্টিগুণ এবং সে সমস্ত পুষ্টিগুণের কার্যকরীতা অনেকটা কমে যায়।

কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কিন্তু অপরপক্ষে যদি আপনি আবার দেখেন তাহলে আপনি যদি ভেজানো বা কাঁচা ছোলা খাচ্ছেন সেক্ষেত্রে ছোলার মধ্যে বেশ কিছু ধরনের টকসিন থাকে বা আপনার ছোলা চাষের সমতে বিভিন্ন ধরনের পেস্ট্রি সাইট ব্যবহার করা হয়। সে সমস্ত পেস্টটি সাইট আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতি করতে পারে কিন্তু সেই ছোলাকে যদি আপনি ড্রাইরোস্ট করে নেন বা যদি আপনি সেদ্ধ করে খান সেক্ষেত্রে এ সমস্ত টকসিন বা পেস্টরি সাইডের সাইড এফেক্ট থেকে আপনি বাঁচতে পারবেন।

তাই যদি আপনি কাঁচা ছোলা খেতে চান বা অংকরিত করে খেতে চান তাহলে সব সময় চেষ্টা করবেন ছোলাকে কমপক্ষে ৪ থেকে পাঁচবার ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে। ডোবা জলের মধ্যে ভিজতে দেন তারপর সেই ছোলা যখন ফুলে উঠবে যতটুকু জল অবশিষ্ট থাকবে সেই জল ফেলে দিয়ে পরিষ্কার জল দিয়ে আরো ২ তিনবার ধুয়ে ফেলুন তারপর আপনি ছোলাটি খান সেক্ষেত্রে কিন্তু এই সমস্ত পেস্টিসাইড বা ছোলার মধ্যে থাকা টকসিসিটি অনেকটা কমে যায়।

এখন আমরা জেনে নেবো সারাদিনে একজন সুস্থ মানুষের কত গ্রাম ছলা খাওয়া উচিত দেখন ছোলার থেকে যদি আপনি ম্যাক্সিমাম হেলথ বেনিফিটস পেতে চান তাহলে ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ছোলা আপনি খেতে পারেন। কিন্তু যদি আপনি অতিরিক্ত মাত্রায় ছোলা খেয়ে ফেলেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের হজমের সমস্যা দেখতে পাওয়া যেতে পারে।

ছোলার ক্ষতিকর দিক

এখন আমরা আলোচনা করে নেব যে ছোলা কাদের জন্য খাবার নিরাপদ নয় দেখুন সর্বপ্রথম বলি যে ছোলার মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে তাই যে সমস্ত মানুষদের সিক্রেটের পেশেন্ট রয়েছেন বা যে সমস্ত মানুষদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা ছোলাটা যতটা সম্ভব কম খেতে পারলেই ভালো হয়। এবং তার সাথে সাথে ছোলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন থাকে যে পিউরিন আপনার রক্তে ইউরিকাসেদের মাত্রাবৃদ্ধি করতে পারে।

তাই যদি আপনি গাউট বা গিটে ভাতের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন বা আপনার রক্তে ইউরিকাসে ১.৫ মাত্রা বেশি রয়েছে সেক্ষেত্রে আপনার ছোলা কম খাওয়াটাই ভালো। ছোলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অগজালেট যে অক্সিজেন আপনার কিডনি স্টোন ফর্মেশন করতে সাহায্য করে। তাই যে সমস্ত মানুষদের কিডনি স্টোনের মত সমস্যা রয়েছে তাদের কিন্তু ছোলাটা এভোয়েড করাই ভালো।

এবং তার সাথে সাথে বেশ কিছু মানুষের মধ্যে ছোলার এলার্জি রয়েছে সে সমস্ত মানুষরা ছোলা খেলেই তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের চুলকানি রাসেস শ্বাসকষ্ট ডাইজেসেনের প্রবলেম ডায়রিয়া এই সমস্ত সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। তাই ছোলা খাবার সাথে সাথেই যদি আপনার এইরকম ধরনের সমস্যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন তাহলে ছোলাটা এভোয়েড করে চলবেন।

Post Share Now

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *