
ভারতের হামলার পর কি পাকিস্তান হামলা করবে প্রধান ৫টি প্রশ্ন?
২০২৫ সালের ৮ মে বুধবার রাতে, নতুন করে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের খবর আসে। ভারতীয় বাহিনী হঠাৎ করে সীমান্ত পেরিয়ে একটি বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির। তবে পাকিস্তান একে পরিষ্কার আগ্রাসন হিসেবে অভিহিত করেছে। এখন সবাই তাকিয়ে আছে পাকিস্তানের দিকে। তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে? আবার কি যুদ্ধ শুরু হবে? নিচে রয়েছে সেই ৫টি বড় প্রশ্ন? যেগুলো এখন সবাই জানতে চায়।
পাকিস্তান কি সামরিকভাবে জবাব দেবে?
এটাই সবচেয়ে বড় এবং জরুরি প্রশ্ন। বিমান হামলার পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একটি কড়া বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে, উপযুক্ত সময় ও স্থানে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে পাকিস্তান।
এর আগেও এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ভারত একই ধরনের আঘাত হানে। তখন পাকিস্তান প্রতিশোধ নিয়েছিল একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে: ইতিহাস কি আবারও নিজেকে বৃত্ত করবে? অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, পাকিস্তান কিছুটা সময় নিতে পারে প্রতিক্রিয়ার আগে। তারা ভারতের কৌশল বুঝে নিতে চায়। তবে অন্যরা বলছেন পাকিস্তান হয়তো দ্রুতই জোরালো সামরিক প্রতিক্রিয়া দিতে পারে। হয়তো মিসাইল হামলা বা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
কূটনৈতিক চাপ বা আলোচনার পথ কি খুলবে?
যুদ্ধ সবসময়ই ব্যয়বহুল শুধু অর্থের দিক থেকে নয় প্রাণহানি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং বৈশ্বিক উদ্বেগও বাড়ে। উভয় দেশের কাছে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি এখন দুই দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।
পাকিস্তান জাতিসংঘে এই ইস্যু তুলে ধরতে পারে। তাদের কূটনীতিকরা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশের সমর্থন চাইছে। তুরস্ক, সৌদি আরব ও চীনের সঙ্গে তারা আলোচনা শুরু করেছে যাতে ভারতের ওপর চাপ বাড়ানো যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে: পাকিস্তান কি অস্ত্রের বদলে কণ্ঠস্বরকে বেশি গুরুত্ব দেবে?
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মনোভাব কেমন?
পাকিস্তানের জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। অনেকেই ক্ষুব্ধ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিশোধের আহ্বান জানানো হচ্ছে। টেলিভিশনে দেশপ্রেমে ভরা গান, ভিডিও চলছে। রাজনীতিকেরা আবেগপ্রবণ বক্তৃতা দিচ্ছেন।
সরকারও চাপের মুখে যদি তারা দুর্বল দেখায়, তাহলে রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই সরকার শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে চাইতে পারে।
তবে একইসাথে তারা জানে একটি ভুল পদক্ষেপে পুরো অঞ্চল যুদ্ধের মুখে পড়তে পারে। জনসাধারণের আবেগ আর জাতীয় স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রাখা কঠিন হবে।
সেনাবাহিনী ও আইএসআই কী ভূমিকা নেবে?
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতি মূলত এদের হাতেই থাকে।
ভারতের বিমান হামলার পরই রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠক করেছেন। আইএসআই এখন ভারতের পরবর্তী পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করবে। তারা পাকিস্তানের জন্য কী প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে উপযুক্ত হতে পারে তা নিয়েও কাজ করছে।
এই প্রতিক্রিয়া সরাসরি সামরিক গোপন হামলা বা সাইবার আকারেও হতে পারে। সিদ্ধান্ত মূলত সেনা ও আইএসআই-এর হাতেই।
দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আগামী কিছু দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভুল সিদ্ধান্ত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই উচিত দায়িত্বশীল আচরণ করা। পাকিস্তানের সামনে প্রতিক্রিয়ার অনেক পথ খোলা। বিশ্ব তাকিয়ে আছে তারা কোন পথ বেছে নেয়। আপাতত ৫টি প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি কিন্তু সময়ই সেই সত্য সামনে আনবে।