১৩ নভেম্বর নিয়ে আওয়ামীলীগ তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন: বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি যেন এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, বাজারে অস্থিরতা চরমে, সাধারণ মানুষ দিশেহারা। একসময় যে বাংলাদেশ স্বনির্ভরতার পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল, আজ সেই দেশটি যেন ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ছে।
বৃদ্ধ, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ও স্বামী-পরিত্যক্তা নারীরা যারা নিয়মিত ভাতা পেতেন, আজ তারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত। মেয়েদের শিক্ষার জন্য উপবৃত্তির টাকা এখন শুধু অতীতের স্মৃতি। মানুষ তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে হতাশার জীবনযাপন করছে।
বিচারের নামে প্রহসন—মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন
দেশজুড়ে এখন চলছে বিচারহীনতার এক ভয়ঙ্কর চিত্র। নিরপরাধ মানুষদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা, অগণিত মানুষকে একসঙ্গে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
একজন হত্যার অভিযোগে কখনও ৩০০ থেকে ৪০০ জন পর্যন্ত আসামি বানানো হচ্ছে, যাদের মধ্যে আছেন বৃদ্ধ, নারী, শিক্ষক, সাংবাদিক, এমনকি এমন মানুষও যারা নিজের পায়ে হাঁটতেও পারেন না।
আদালতগুলো আজ পরিণত হয়েছে প্রহসনের মঞ্চে, যেখানে বিচারক থেকে শুরু করে আইনজীবী পর্যন্ত সবাই একই সিন্ডিকেটের অংশ বলে অভিযোগ উঠছে। ফলাফল—বিচারের নামে চলছে প্রতিশোধ, আর আইনের নামে হচ্ছে জুলুম। ন্যূনতম মানবাধিকারও যেন আজ বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৩ই নভেম্বর: অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদের প্রতীক
এই অস্থিরতা, অবিচার ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ১৩ই নভেম্বর ‘লকডাউন কর্মসূচী’ ঘোষণা করেছে। তবে এটি কোনো সহিংস আন্দোলন নয়, বরং এক অহিংস অসহযোগ আন্দোলন—যার মাধ্যমে জনগণ তাদের নীরব প্রতিবাদ জানাবে।
এই কর্মসূচির আহ্বান হলো—
- ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করবে,
- চাকরিজীবীরা অফিসে না গিয়ে একাত্মতা জানাবে,
- ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান বন্ধ রাখবে,
- পরিবহণ শ্রমিকরা সেদিন যানবাহন বন্ধ রাখবে।
লকডাউন মানে শুধু থেমে যাওয়া নয়; বরং একসঙ্গে থেমে গিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দেওয়া। যখন কথা বলা যায় না, তখন নীরবতাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে শক্তিশালী আওয়াজ।
নীরবতা কখনও দুর্বলতা নয়—এটি প্রতিরোধের ভাষা
১৩ই নভেম্বরের এই লকডাউন তাই কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচী নয়, এটি মানুষের বেঁচে থাকার আহ্বান। এটি সেই প্রতিবাদের ভাষা, যা সহিংসতা নয়, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে অটল অবস্থানের প্রতীক। এই দিনে প্রতিটি নাগরিক তার অবস্থান থেকে জানাবে—“আমরাই এই দেশের প্রকৃত শক্তি, আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সবাই এক।”

