প্রতি বছরের মতো এবারও মা ইলিশ রক্ষার জন্য দেশের নদ-নদীতে চলেছিল ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। সেই অভিযান শেষ হচ্ছে আজ মধ্যরাতে। ফলে আগামীকাল থেকে ইলিশ ধরার অনুমতি পেতে যাচ্ছেন দেশের হাজার হাজার জেলে। চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ভোলাসহ উপকূলজুড়ে ইতোমধ্যেই জেলেরা তাদের নৌকা ও জাল মেরামত শেষ করে প্রস্তুত। বাজারে আবারও দেখা মিলবে রুপালি ইলিশের ঝলক।
ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ এবং এটি বাঙালির আবেগের অংশ। নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন পর নদীতে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন জেলেরা। শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, “নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। এবারে রেকর্ড পরিমাণে ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।”
নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে জেলেদের প্রস্তুতি
নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার জন্য জেলেরা দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ জাল শুকাচ্ছেন, কেউ আবার নৌকা রং করছেন বা ইঞ্জিন পরীক্ষা করছেন। অনেক জেলে জানিয়েছেন, এতদিন পর আবার ইলিশ শিকারে নামতে পারার আনন্দ তাদের মুখে স্পষ্ট।
আরো পড়ুন: আগামীকালের আবহাওয়া ২৬ অক্টোবর ২০২৫
টাটকা ইলিশের অপেক্ষায় ক্রেতারা
ইলিশ ভাজি, পাটিসাপটা কিংবা সর্ষে ইলিশ—সব খাবারের জন্যই এই রুপালি মাছের কদর সর্বজনবিদিত। যারা ইলিশপ্রেমী, তারা আগামীকাল থেকেই বাজারে টাটকা ইলিশ কেনার সুযোগ পাবেন। অনেকের মতে, নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীর ইলিশ আরও স্বাদে ও আকারে ভালো হয়।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় সরকার প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করেছিল। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন অভয়াশ্রমে ও বঙ্গোপসাগরের জলসীমায় সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এই উদ্যোগের ফলে প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছে, যা ভবিষ্যতের ইলিশ উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা মৎস্য কর্মকর্তাদের।
মা ইলিশ রক্ষার এই ২২ দিনের অভিযান শেষ হওয়ার পর দেশের জেলেরা আবার নদীতে ফিরছেন নতুন আশায়। আগামীকাল থেকে ইলিশ ধরার অনুমতি পাওয়ার ফলে একদিকে জেলেরা স্বস্তি পাবেন, অন্যদিকে বাজারে ফিরে আসবে বাঙালির প্রিয় রুপালি ইলিশের প্রাচুর্য।

