বিয়ের আনন্দ তখনও ঘরে ঘরে। ইনস্টাগ্রামে সদ্য পোস্ট দিয়েছেন, “Got Married”
হয়তো ভাবছিলেন কিছুদিন স্ত্রীকে সময় দেবেন, একটু বিশ্রাম নেবেন।
কিন্তু ভাগ্য যেন অন্য গল্প লিখে রেখেছিল আফগানিস্তানের তরুণ পেসার বিলাল সামির জন্য।
বিয়ের দুই দিন না যেতেই জাতীয় দলের ডাক।
প্রিয় মানুষকে রেখে বেরিয়ে পড়লেন দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামতে
আর সেই মাঠেই লিখলেন নিজের জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়।
সুযোগ পেলেন হঠাৎই, কিন্তু কাজে লাগালেন দারুণভাবে
আফগানিস্তান দলের আরেক পেসার মোহাম্মদ সালিমের চোটে হঠাৎ সুযোগ পান সামি।
তখনও মাত্র একটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তাঁর ঝুলিতে
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল,
৩ ওভারে ২৫ রান দিয়েছিলেন, উইকেট পাননি।
তারপর দীর্ঘ অপেক্ষা।
তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে থেমে থাকেননি এই ২১ বছর বয়সী তরুণ।
গাজী আমানুল্লাহ খান রিজিওনাল ওয়ানডে টুর্নামেন্টে
স্পিনঘার অঞ্চলের হয়ে ২২.৯০ গড়ে ১০ উইকেট নিয়ে
নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন।
সেই ধারাবাহিকতাই তাঁকে ফিরিয়ে আনে জাতীয় দলে
এবার সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগালেন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সামির আগুনে স্পেল
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে সুযোগ পাননি সামি।
কিন্তু সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর যখন সুযোগ পেলেন,
তখন যেন নিজের সব অপেক্ষার জবাব দিলেন বল হাতে।
মাত্র নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই ৩৩ রানে ৫ উইকেট
যা তাঁর লিস্ট–এ ক্যারিয়ারেরও সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।
শুরুতেই বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে।
তারপর অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকেও বিদায় দেন।
শেষ দিকে তুলে নেন রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও হাসান মাহমুদের উইকেট।
আফগানিস্তানের ২০০ রানের জয়ের দিনে সামির হাতে উঠল ম্যাচসেরার পুরস্কারও।
সামির অনুভূতি: “কাজটা সহজ ছিল না”
ম্যাচ শেষে সামির কণ্ঠে ফুটে ওঠে তৃপ্তির ছাপ
নিজের খেলা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। দল আমার পাশে ছিল।
কাজটা সহজ ছিল না, কারণ দলে অনেক বিকল্প আছে।
খুব ভালো লাগছে, আজ নিজের সেরাটা দিতে পেরেছি।
হয়তো তাঁর স্ত্রীও তখন টিভির সামনে বসে,
হাসিমুখে দেখছিলেন জীবনের নতুন অধ্যায়ের এই শুভ সূচনা
আরো পড়ুন: ইউরোপে প্রথম বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড, রোনালদোর রেকর্ড রাতেও অপেক্ষায় পর্তুগাল
মাঠে সাফল্য, ঘরে আশীর্বাদ
একজন ক্রিকেটারের জীবনে যেমন অনুশাসন ও পরিশ্রম প্রয়োজন,
তেমনি মানসিক শান্তিও গুরুত্বপূর্ণ।
বিয়ের পরের সুখ, প্রিয়জনের আশীর্বাদ
সবকিছু মিলিয়ে সামির জীবনে যেন এসেছে নতুন প্রেরণা।
এ যেন ভালোবাসা ও সাফল্যের এক মিশেল গল্প,
যেখানে একজন তরুণ নিজের প্রতিভা দিয়ে
জাতীয় দলে স্থায়ী জায়গা পেতে লড়ছেন হৃদয়ের সবটুকু উজাড় করে।