আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর (২০২৫) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি থাকবে ৩.৮ শতাংশ-যা গত এপ্রিলের পূর্বাভাসের সঙ্গে অভিন্ন। সংস্থাটির মতে, আগামী বছর (২০২৬) এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪.৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
এদিকে, আইএমএফ মনে করছে, এ বছর বাংলাদেশের গড় সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অন্যান্য সংস্থার ভিন্ন ভিন্ন পূর্বাভাস
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরাও নিজেদের পূর্বাভাস দিয়েছে।
- বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৮ শতাংশ।
- এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ধারণা করছে, প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ শতাংশ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে ৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান
আইএমএফের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বিশ্বের গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৩.২ শতাংশ। অর্থাৎ, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক গড়ের কাছাকাছি থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রতিনিধি দলটি আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে চলমান ঋণ কর্মসূচি, আর্থিক খাতের সংস্কার এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা করছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
আরো পড়ুন : হোয়াইটওয়াশ এড়াতে যেমন হতে পারে বাংলাদেশের একাদশ
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রবৃদ্ধির এই ধীরগতি বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। রপ্তানি আয়ে বৈচিত্র্য আনা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে পারলে প্রবৃদ্ধি আবারও গতি পেতে পারে।
অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখন সময় এসেছে বাস্তবসম্মত নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার।