Tuesday, October 14, 2025
Homeপ্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজন স্বামীর সহিংসতার শিকার

প্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজন স্বামীর সহিংসতার শিকার

স্বামীর সহিংসতা এখনো ভয়াবহ বাস্তবতা দেশের প্রতি চারজন নারীর মধ্যে তিনজন জীবনে অন্তত একবার এমন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শারীরিক, যৌন, মানসিক, অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের সহিংসতায় জর্জরিত এই নারীদের ৬২ শতাংশ কখনো মুখই খোলেননি। তবে আশার খবর, আগের জরিপের তুলনায় সহিংসতার হার প্রায় ১৭ শতাংশ কমেছে এমন তথ্য উঠে এসেছে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’-এ।

বিবিএস জরিপে যে ভয়াবহ বাস্তবতা উঠে এসেছে

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে প্রকাশ করেছে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’।
আজ সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন বিবিএসের উপপরিচালক মিনাক্ষী বিশ্বাস।

জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৭৬ শতাংশ নারী জীবনে অন্তত একবার স্বামীর সহিংস আচরণের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ গত এক বছরের মধ্যেই এ ধরনের সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন। উদ্বেগজনকভাবে, সহিংসতার শিকার তিনজনের মধ্যে দুজন (৬২ শতাংশ) কখনো তাঁদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেননি।

যৌন সহিংসতার হার এখনো উদ্বেগজনক

অর্ধেকের বেশি নারী (৫৪ শতাংশ) জীবদ্দশায় স্বামীর হাতে শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ নারী গত এক বছরে একাধিকবার এমন সহিংসতার সম্মুখীন হয়েছেন।
বিবাহিত নারীদের মধ্যে ৭ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শারীরিক নির্যাতন এবং ৫ শতাংশ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে জানায় জরিপটি।

এ ছাড়া, শাশুড়ি ও পুরুষ আত্মীয়রা শারীরিক সহিংসতায় বেশি জড়িত, আর বন্ধু ও পরিচিতজনের মাধ্যমে যৌন সহিংসতা বেশি ঘটে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও বাড়ছে সহিংসতা

প্রযুক্তিনির্ভর সহিংসতাও বাড়ছে দেশে। জরিপে দেখা যায়, ৮ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ডিজিটাল মাধ্যমে জেন্ডার–ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। যৌন ব্ল্যাকমেল, ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে অপব্যবহার এবং অনলাইন নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ এর প্রধান ধরন

আইনি সহায়তা ও সচেতনতার ঘাটতি

সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। আইনি সহায়তা নিয়েছেন মাত্র ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
অন্যদিকে, স্বামীর বাইরে অন্যদের মাধ্যমে সহিংসতার শিকার নারীদের মাত্র ৩ দশমিক ৮ শতাংশ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
প্রায় অর্ধেক নারীই জানেন না কোথায় অভিযোগ জানাতে হয়, আর সহিংসতা প্রতিরোধের হেল্পলাইন ১০৯ সম্পর্কে অবগত মাত্র ১২ শতাংশ নারী।

আরো পড়ন:আগামী নির্বাচনে পূর্বের তিন দায়িত্বশীলদের আর দেওয়া হবে না দায়িত্ব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা

ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য কাইয়ুম আরা বেগম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শবনম মোস্তারি।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের প্রতিনিধি ক্যাথরিন ব্রিন কামকং।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ নিউজ