বাংলাদেশ নারী দলের বিপক্ষে ম্যাচে ভারতীয় টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কে তোলপাড় ক্রিকেট মহল। গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা অধিনায়ক হিদার নাইট নিজেই জানিয়েছেন তিনি ভেবেছিলেন, ওই বলেই আউট হয়েছেন। কিন্তু টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে তিনি ‘নট আউট’ ঘোষিত হন, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ব্যাট হাতে নেন নাইট। একপ্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও তিনি দলকে ধরে রাখেন। ইংল্যান্ড যখন ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে, তখনও অবিচল ছিলেন নাইট। শেষ পর্যন্ত ১১১ বলে অপরাজিত ৭৯ রানের ইনিংসে দলকে ৪ উইকেট হাতে রেখে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন এই ইংলিশ অধিনায়ক।
কিন্তু এই ইনিংসের মধ্যেই লেগেছে বিতর্কের ছোঁয়া। অন্তত তিনবার আউটের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলেও প্রতিবারই সিদ্ধান্ত গেছে নাইটের পক্ষে। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটে ১৫তম ওভারে।
ফাহিমা খাতুনের বলে কাভার অঞ্চলে একটি নিচু ক্যাচ নেন স্বর্ণা আক্তার। মাঠের সবাই নিশ্চিত ছিলেন, সেটি পরিষ্কার ক্যাচ। নাইটও নিজে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটছিলেন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠান। রিপ্লে দেখে ভারতীয় টিভি আম্পায়ার গায়াত্রী ভেনুগোপালান জানান, ফিল্ডারের আঙুল পুরোপুরি বলের নিচে ছিল না। ফলে নাইটকে ‘নট আউট’ ঘোষণা করা হয়।
এই সিদ্ধান্তেই বদলে যায় ম্যাচের গতি। ফাহিমা খাতুন ম্যাচশেষে বলেন,
“(হিদার নাইটের) ওই উইকেটটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা আমরা সবাই জানি। যদি সিদ্ধান্তটা আমাদের পক্ষে যেত, ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারত।”
এমনকি জয়ের পর নাইটও স্বীকার করেছেন, তিনিও প্রথমে ভেবেছিলেন আউট হয়েছেন।
“প্রথমে ভেবেছিলাম, বলটা ওপরেই ছিল, ক্যাচটাও পরিষ্কার মনে হয়েছিল। তাই চলে যাচ্ছিলাম। কিন্তু টিভি আম্পায়ার অন্য সিদ্ধান্ত দেন। অবশ্যই ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছি।”
ম্যাচে ১০ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট নেওয়া ফাহিমা বলেন,
“আমাদের সবারই মনে হয়েছিল এটা পরিষ্কার আউট। মাঠের আম্পায়ারও তাই দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত পাল্টে যাওয়া হতাশাজনক।”
আরো পড়ুন : লা লিগার ম্যাচ বিদেশে আয়োজন নিয়ে বিভক্ত সমর্থকগোষ্ঠী
এই ম্যাচে তিনবার রিভিউ থেকে বেঁচে যান নাইটপ্রথমবার ক্যাচের আবেদনে, দ্বিতীয়বার এলবিডব্লুতে, আর তৃতীয়বার সেই বিতর্কিত ক্যাচে। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট কাটিয়ে দলে ফেরা ইংল্যান্ডের এই অভিজ্ঞ ব্যাটার বলেন,
“ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে তিনবার এভাবে বেঁচে যাওয়াটা প্রথম। প্রথমবার জানতাম বল ব্যাটে লাগেনি, কিন্তু পরের দুইটা ভাগ্যের বিষয়ই ছিল। এটাই হয়তো ডিআরএসের সৌন্দর্য।”
বাংলাদেশ দল ও সমর্থকদের হতাশার মধ্যেই এই বিতর্ক ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন অন্য কোনো আম্পায়ার হলে কি সিদ্ধান্তটা ভিন্ন হতো? তবে যা-ই হোক, হিদার নাইটের ইনিংসই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়-আশা ছিনিয়ে নিয়েছে।