বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় আজ প্রাণভরে উদ্যাপন করছে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে, যা প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব নামেও পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ও শ্রদ্ধার উৎসব এটি। মারমা ভাষায় “ওয়াগ্যোয়াই” মানে প্রবারণা পূর্ণিমা এবং “পোয়ে” মানে উৎসব তাই এই দিনটি তাদের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিচ্ছবি।
প্রবারণা পূর্ণিমায় ভক্তদের মিলনমেলা
প্রভাত থেকেই বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে ভক্তদের ঢল নামে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে শুরু হয় বুদ্ধমূর্তি স্নান ও ধর্মীয় প্রার্থনা। ভিক্ষুদের উদ্দেশে অন্ন ও অর্থদান (ছোয়াইং), ফুলপূজা, পঞ্চশীল গ্রহণসহ নানা ধর্মীয় আচার পালনে মুখর থাকে বিহারগুলো।
বিশেষ করে বান্দরবান শহরের রাজগুরু বৌদ্ধবিহারে সকাল থেকেই চলছে ফানুস ওড়ানো ও প্রদীপ প্রজ্বালনের উৎসব। ছোট-বড় সবাই একত্রে মিলিত হয়ে আলোর ঝলকানিতে রাঙিয়ে তুলছেন প্রবারণার রাত্রি।
ঐতিহ্য ও ভক্তির সমন্বয়
ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে কেবল ধর্মীয় নয়, এটি মারমা সংস্কৃতির ঐতিহ্যেরও প্রতীক। মঙ্গল রথযাত্রা, দেবতার মূর্তি (পোছোমা) স্থাপন, প্রদীপ জ্বালানো এবং ফানুস উড়ানো প্রতিটি আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায় শান্তি, সহমর্মিতা ও শুভকামনার বার্তা।
বিহারে ভক্তরা মহাবৌদ্ধবিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সুবন্নলংকারা মহাথের-এর ধর্মদেশনা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করেন। এ সময় অনেক উপাসিকা কল্পতরু বা “টাকার গাছে” অর্থ ঝুলিয়ে দান করেন, কেউ আবার প্রদীপ জ্বালিয়ে জগতের শান্তি কামনা করেন।
আরো পড়ুন:জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাব: চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে রাজনৈতিক দলগুলো
ফানুসে আলোকিত বান্দরবানের আকাশ
রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে ফানুসে ভরে ওঠে বান্দরবানের আকাশ। শিশু থেকে বৃদ্ধ— সবার হাতে রঙিন ফানুস, চোখে আনন্দের ঝিলিক। প্রার্থনা ও আলোয় মুখর এই দিনটি যেন ভক্তি, ঐক্য ও মানবতার এক চিরন্তন প্রতীক হয়ে ওঠে