আওয়ামী লীগের ভোটারদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান কী? জাতীয় নির্বাচনের আগে এই প্রশ্নই তোলপাড় তুলেছে সংলাপ সভায়। আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় ইসিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকরা। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও, তাদের কোটি ভোটার দেশের নাগরিক তাদের ভূমিকা নিয়ে এখন দৃষ্টি সবার।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে বসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভোটারদের নিয়ে ইসির ভাবনা কী।
সংলাপে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ সরাসরি প্রশ্ন রাখেন,
“আওয়ামী লীগের ভোটারদের তো বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তারা দেশের নাগরিক, ভোটাধিকার তাদেরও আছে। যদিও দল হিসেবে তারা এখন নিষিদ্ধ, কিন্তু ইসি যদি এই বিষয়ে অবস্থান না জানায়, তাহলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।”
তিনি আরও বলেন, “তারা অনুশোচনা করেনি, অনুতপ্তও নয়, কিন্তু তবুও তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে সেটি কখনোই অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না
অন্যদিকে দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মারুফ কামাল খান বলেন,একটি দল না থাকলেই নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না এটা ঠিক নয়। যদি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা যায়, মানুষকে ভোটে উৎসাহিত করা যায়, তাহলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব।”
তবে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তাঁর মতে, “যদি নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক না হয়, সমাজ আরও বিভাজনের দিকে যাবে। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, তবেই সংঘাত কমবে।”
আরো পড়ুন : জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের প্রস্তাব: চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে রাজনৈতিক দলগুলো
তিনি আরও যোগ করেন,দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ এখন নির্বাচনের বাইরে। সাধারণ মানুষের কোনো দোষ নেই তারা তো কোনো ফ্যাসিবাদী নন। অর্ধেক মানুষকে বাইরে রেখে কোনো উৎসবমুখর নির্বাচন সম্ভব নয়।”
সংলাপের শেষদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের উত্থাপিত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললেও, আওয়ামী লীগের ভোটারদের নিয়ে করা প্রশ্নের জবাব দেননি।
নিষিদ্ধ দলের ভোটারদের নিয়ে ইসির নীরবতা বাড়াল প্রশ্ন
ইসির পক্ষ থেকে কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া না আসায় সাংবাদিকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কৌতূহল ও অসন্তোষ। অনেকেই মনে করছেন, কমিশনের নীরবতা ভোটার অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি বড় অংশের নাগরিককে ‘নিষিদ্ধ রাজনীতির ছায়ায়’ ফেলে রাখলে নির্বাচনের গণতান্ত্রিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।