প্রথম দেখায় শাওমি ১৭ প্রো–এর পেছনের ডিসপ্লেটি হয়তো অনেকের কাছেই বাড়তি সাজসজ্জা মনে হতে পারে। কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলেই বোঝা যায়, এটি নিছক ফ্যাশনের বিষয় নয়। শাওমি এখানে পুরোপুরি নতুনভাবে ভাবছে, কীভাবে একটি সেকেন্ডারি স্ক্রিন ব্যবহারকারীর কাজে আসতে পারে।
ব্যক্তিগত ও কাস্টমাইজযোগ্য

১৭ প্রো মডেলে রয়েছে ২.৭ ইঞ্চি আর ১৭ প্রো ম্যাক্সে ২.৯ ইঞ্চির অ্যামোলেড স্ক্রিন। ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট এবং সর্বোচ্চ ৩,৫০০ নিট উজ্জ্বলতার কারণে এটি শুধু তথ্য দেখানোর টিকারের মতো নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ডিসপ্লে। ব্যবহারকারীরা এখানে ঘড়ির মতো বিভিন্ন ওয়াচ ফেস বেছে নিতে পারেন—পুরনো মেকানিক্যাল ডিজাইন থেকে শুরু করে আধুনিক মিনিমাল স্টাইল পর্যন্ত।
মজার বিষয় হলো, এতে আছে “পাংদা” নামের ভার্চুয়াল পোষা পান্ডা, যে ব্যবহারকারীর ফোন ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী নানা অ্যানিমেশন দেখায়। এমনকি এআই–এর মাধ্যমে পরিবারের সদস্য বা পোষা প্রাণীর ছবি নিয়ে সেটিকে অ্যানিমেটেড ওয়ালপেপারেও রূপান্তর করা যায়।
শুধু সৌন্দর্য নয়, কার্যকর ফিচারও
এই রিয়ার স্ক্রিন কেবল সুন্দর ভিজ্যুয়ালের জন্য নয়, বরং বাস্তব ব্যবহারেও কার্যকর। এখানে দেখা যায় ফ্লাইট বোর্ডিং পাস, ডেলিভারি ট্র্যাকিং, রাইড শেয়ার আপডেট বা মিউজিক কন্ট্রোল। প্রয়োজনীয় কিউআর কোড কিংবা নোটও পিন করা যায়, যেন ছোট্ট এক ডিজিটাল স্টিকি নোট সবসময় হাতের কাছে থাকে।
শাওমি ইন্টারফেসটি এমনভাবে তৈরি করেছে যাতে সামনে–পেছনে স্ক্রিন ঘোরানোর সময় ভুল করে টাচ হওয়া কম হয়।
সেলফি ও ভিডিওর জন্য বড় সুবিধা

রিয়ার ডিসপ্লে ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এটি ক্যামেরাকে নতুনভাবে কাজে লাগায়। সামনের সাধারণ সেলফি ক্যামেরার বদলে ব্যবহার করা যায় মূল রিয়ার ক্যামেরাই। ফলে ব্যবহারকারীরা আরও পরিষ্কার সেলফি, ভ্লগ এবং ভিডিও কল উপভোগ করতে পারবেন। পোর্ট্রেট, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, বিউটি ফিল্টারসহ সব ফিচারও এভাবে ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুন: এশিয়া কাপে বিরল ঘটনা: আউটও হলেন না, রান আউটও হলেন না শানাকা
এ ছাড়া এখানে আছে ফটো কোলাজ ও ছোট অ্যানিমেশনের মতো ফিচার, যা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ।
গেম খেলতেও পারে
বিশেষ রেট্রো গেমিং কেস ব্যবহার করলে এই রিয়ার ডিসপ্লে ছোট্ট এক গেম বয়–এ পরিণত হয়। কেসটির বোতামগুলো তারহীনভাবে ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহারকারীদের পুরোনো ধাঁচের গেম খেলার সুযোগ দেয়। যদিও এটি খুব প্রয়োজনীয় নয়, তবে ব্যতিক্রমী এই আইডিয়াটি প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে বাড়তি আনন্দ যোগ করবে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই ফিচার
বর্তমানে যেখানে অনেক স্মার্টফোন একই রকম মনে হয়, শাওমি ১৭ প্রো–এর রিয়ার ডিসপ্লে সত্যিই আলাদা করে চোখে পড়ে। এটি কোনো মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য নয়, বরং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য। ব্যক্তিগতকরণ, সেলফির নতুন সুযোগ কিংবা উৎপাদনশীলতার সহায়ক টুল—সব মিলিয়ে এটি প্রযুক্তিকে আরও মজাদার করে তুলেছে।