সান ফ্রান্সিসকো/নিউইয়র্ক, ২১ সেপ্টেম্বর (রয়টার্স) – প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন H-1B ভিসা ফি আরোপের খবর পাওয়ার পর ভারত ও চীনের প্রবাসী কর্মীরা হঠাৎ বিপর্যয়, বিভ্রান্তি ও ক্রোধের মধ্যে পড়েছেন। ফলে তারা বিদেশে থাকা ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করে তড়িঘড়ি করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসছেন।
বড় টেক কোম্পানি ও ব্যাংকগুলো তড়িঘড়ি নোটিশ জারি
মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, আলফাবেট এবং গোল্ডম্যান স্যাকসসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মচারীদের জরুরি ইমেল পাঠিয়েছে, যাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১২:০১ a.m. U.S. ইস্টার্ন টাইম (রাত ৪:০১ GMT) এর আগে দেশে ফিরে আসতে এবং দেশ ছাড়তে না।
বিভ্রান্তি ও ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাখ্যা
এক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা শনিবার স্পষ্ট করেছেন যে আদেশটি শুধুমাত্র নতুন আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য, যারা পূর্ববর্তী ভিসা ধারক বা নবায়ন চাইছেন তাদের জন্য নয়। তবে ট্রাম্পের ঘোষণা সিলিকন ভ্যালিতে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আরো পড়ুন: তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটে বাংলাদেশের জয়, ছুঁলেন হাজার রানের মাইলফলক।
সান ফ্রান্সিসকোর বিমানবন্দরে কয়েকজন ভারতীয় নাগরিক জানান, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে তারা দেশে ফিরে আসতে পারবেন না ভেবে ছুটির অবকাশ মাঝেই বিমান ফ্লাইট বাতিল করেছেন। এক বড় প্রযুক্তি কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, “পরিবার এবং এখানে থাকা—দুইয়ের মধ্যে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হলো।”
এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে কয়েকজন যাত্রী প্লেন ছাড়ছেন। যদিও রায়টার্স তা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি।
ব্যক্তিগত জীবন ও চাকরির চাপ
কিছু প্রবাসী কর্মী কেবল কয়েক ঘণ্টা বিদেশে থাকার পরই ফিরে এসেছেন। এক মহিলা, যিনি নিউইয়র্ক থেকে প্যারিস যাওয়ার ফ্লাইটে ছিলেন, শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট থেকে নামতে বাধ্য হন। তিনি বলেছেন, “আমি অবমূল্যায়িত এবং shaken অনুভব করেছি। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে পরিকল্পনা বাতিল করতে হলো।”
ট্রাম্পের H-1B পুনর্বিবেচনা
জানুয়ারি থেকে ট্রাম্প প্রশাসন একটি ব্যাপক অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন করেছে, যার অংশ হিসেবে H-1B ভিসার পুনর্গঠনই অন্যতম। প্রশাসনের বক্তব্য, ভিসার মাধ্যমে বিদেশী কর্মীরা বেতন কমিয়ে দিচ্ছেন, যা আমেরিকান নাগরিকদের জন্য চাকরির বাজারে প্রভাব ফেলছে।
কর্মীদের প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক মিডিয়ায় আলোচনার ঝড়
রেডনোট এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে H-1B কর্মীরা এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন। এক ব্যবহারকারী বলেছেন, “আমার জীবন যেন H-1B দাসের মতো।” কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকের সময়ের মতো এই হঠাৎ ফিরে আসা তাদের জন্য ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।
ভিসা ফি সংক্রান্ত বিভ্রান্তি
প্রেসিডেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী, কিছু আবেদনকারীকে $100,000 ভিসা ফি দিতে হবে। তবে হোয়াইট হাউস স্পোকসপারসন নিশ্চিত করেছেন এটি বার্ষিক নয়, বরং এককালীন ফি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বছর বসবাসকারী এক নিভিদিয়া ইঞ্জিনিয়ার জানান, জাপানে ছুটিতে থাকার পর খবর পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে ফ্লাইট পুনঃনির্ধারণ করেছেন।