নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির নবঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে তীব্র অভ্যন্তরীণ বিরোধ দেখা দিয়েছে। ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় বিএনপির অন্তত তিন পক্ষ বিভক্ত হয়ে পড়েছে কেউ কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দমিছিল করেছে, আবার কেউ বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সেনবাগে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে
৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেলা বিএনপি সেনবাগ উপজেলা ও পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। ঘোষণার পর থেকেই নতুন কমিটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনবাগ বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে তিনটি পক্ষ সক্রিয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান এবং সৌদি আরব বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নানের অনুসারীরা। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে মান্নানের অনুসারীরা বেশি পদ পাওয়ায় তাঁরা সন্তুষ্ট থাকলেও তুলনামূলকভাবে বঞ্চিত মফিজুর রহমানের অনুসারীরা প্রতিবাদে নামেন।
উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জয়নুল আবদিন ফারুকের অনুসারী মোক্তার হোসেন পাটোয়ারীকে এবং সদস্যসচিব হয়েছেন মান্নানপন্থী আনোয়ার হোসেন। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন মান্নানপন্থী ভিপি মফিজুল ইসলাম। এ ছাড়া ঘোষিত দুই কমিটির মোট ৯৭ সদস্যের মধ্যে কাজী মফিজের অনুসারীরা মাত্র ২১টি পদ পেয়েছেন, বাকি ৭৬টি পদ ভাগ হয়েছে ফারুক ও মান্নানপন্থীদের মধ্যে।
কমিটি প্রত্যাখ্যান করে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মফিজুর রহমানপন্থীরা। এ সময় জেলা নেতাদের বিরুদ্ধে “টাকার বিনিময়ে পদ বণ্টনের” অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা।
আরো পড়ুন:মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা জানালেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগে সদ্য পদ পাওয়া উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম হোসেন খোন্দকার ও সদস্য দলিলুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দুজনই কাজী মফিজের অনুসারী বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, জয়নুল আবদিন ফারুকপন্থী কয়েকজনও কমিটি প্রত্যাখ্যান করে সমাবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হান্নান ও পৌর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক বাবুলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
কাজী মফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন রাজপথে থেকে মামলা-জেল খাটলেও তাঁর অনুসারীরা কাঙ্ক্ষিত মূল্যায়ন পাননি। এ কারণে তিনি জেলা কমিটির কাছে আপত্তি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, পৌর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি কাঙ্ক্ষিত পদ পেয়েছেন এবং এখন তাঁর লক্ষ্য সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করা।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর বলেন, “অনেক যাচাই-বাছাই করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়েই কমিটি করা হয়েছে। এরপরও কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”