বিশ্ব রাজনীতি যখন একের পর এক অস্থির ঘটনায় কাঁপছে, তখন মধ্যপ্রাচ্যে আবারও উত্তেজনা বেড়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন—হামাস নেতারা পৃথিবীর যেখানেই থাকুন না কেন, তাঁদের রেহাই নেই। এই ঘোষণা ঘিরে নতুন করে আলোচনার ঝড় বইছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
নেতানিয়াহুর স্পষ্ট বার্তা
গত সোমবার জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু এ মন্তব্য করেন। তাঁর পাশে ছিলেন ইসরায়েল সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। নেতানিয়াহু বলেন, “প্রতিটি দেশের নিজস্ব সীমানার বাইরেও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, সাম্প্রতিক কাতার হামলা ইসরায়েলের নিজস্ব পরিকল্পনায়ই হয়েছে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নেই।
কাতারে হামলার প্রতিক্রিয়া
গত সপ্তাহে কাতারে হামাস নেতাদের টার্গেট করে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হয়। তবে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা প্রাণে বেঁচে যান। এ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষোভ দেখা দেয়। কাতারের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ হামলার নিন্দা জানান।
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে—মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি দুর্বল হয়ে পড়ছে?
আরো পড়ুন: আজকের রুপার দাম ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ – ২২, ২১, ১৮ ক্যারেট
বিবিসিকে দেওয়া এক প্রশ্নের জবাবে মার্কো রুবিও জানান, উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে ওয়াশিংটন এখনও দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যদিও আরব দেশগুলো একযোগে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কাতারের রাজধানী দোহায় সম্প্রতি আরব ও মুসলিম দেশগুলোর জরুরি শীর্ষ সম্মেলন বসে। সেখানে কাতারের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, “দ্বিমুখী আচরণ না করে ইসরায়েলকে শাস্তি দিতে হবে।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি রয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে দেশটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সাল থেকেই হামাসের রাজনৈতিক দপ্তর কাতারে সক্রিয় রয়েছে এবং দেশটি ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে।
আরো পড়ুন: আগামীকালের আবহাওয়া ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫: বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস
নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে—আগামী দিনগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা বাড়তে পারে। হামাসের নেতাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘোষণা শুধু ফিলিস্তিন নয়, আরব বিশ্বকেও নাড়া দিয়েছে। এখন সবার নজর কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ভূমিকার ওপর, যারা একদিকে হামাস-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে, অন্যদিকে নিজেদের কৌশলগত স্বার্থও রক্ষা করছে।