বাংলাদেশে গ্রামীণ এলাকায় নলকূপের পানিতে আর্সেনিক ঝুঁকি সহজেই চিহ্নিত করবে নতুন মোবাইল অ্যাপ ‘আই আর্সেনিক’। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অ্যাপ ব্যবহারকারীর অবস্থান, কূপের চৌকাঠের দাগ এবং গভীরতার তথ্য বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ কূপ চিহ্নিত করে। ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্টিন ইউনিভার্সিটি ও ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই অ্যাপ গ্রামীণ পরিবারকে নিরাপদ পানির জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
গ্রামীণ বাংলাদেশে নলকূপ প্রধান পানির উৎস হলেও এর সঙ্গে লুকিয়ে আছে বিষাক্ত আর্সেনিকের ঝুঁকি। এখন পর্যন্ত আর্সেনিক পরীক্ষা করার জন্য কেমিক্যাল কিট বা ল্যাব টেস্টের ওপর নির্ভর করতে হত, যা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।
এই সমস্যা সমাধানে গবেষকরা উদ্ভাবন করেছেন মোবাইল অ্যাপ ‘আই আর্সেনিক’, যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নলকূপের আর্সেনিক ঝুঁকি নির্ধারণ করতে সক্ষম। অ্যাপটি ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্টিন ইউনিভার্সিটি ও ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি।
প্রযুক্তি ও কার্যপ্রণালী
অ্যাপটি তিনটি তথ্য ব্যবহার করে ৯০% এর বেশি নির্ভরযোগ্যতায় ঝুঁকি অনুমান করে:
- নলকূপের চৌকাঠে পড়া দাগ – ভূ-রসায়নিক নির্দেশক।
- কূপের গভীরতা।
- রাস্তার ঠিকানা ও গ্রামের অবস্থান, যা ৩-মাত্রিক অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে।
তাছাড়া ক্লাউড-ভিত্তিক AI মডেল ব্যবহার করে দাগের রং বিশ্লেষণ করা হয় এবং পূর্বের ডেটার সঙ্গে মিলিয়ে ঝুঁকির মাত্রা রঙের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে দেখানো হয়।
মাঠ পর্যায়ের যাচাইতে দেখা গেছে, ১০০টি কূপের মধ্যে ৮৪টি কূপের ঝুঁকি অ্যাপ সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষ ব্যয়বহুল কিট বা বিশেষ প্রশিক্ষণ ছাড়াই নলকূপের নিরাপত্তা যাচাই করতে পারবে।
গবেষক দলের মন্তব্য
উদ্ভাবনী দলের প্রধান গবেষক ড. মোহাম্মদ হক বলেন, “আর্সেনিক একটি নীরব স্বাস্থ্যঝুঁকি, যা কোটি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে। এই অ্যাপ গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি বুঝতে এবং নিরাপদ পানির সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।”
আরো পড়ুন: জিমেইলের আপডেট: প্রমোশনস ও পারচেসেস ট্যাবে বড় পরিবর্তন
অ্যাপটি ২০১৯ সালে গবেষণা তহবিল পাওয়ার পর তৈরি শুরু হয়, ২০২৪ সালে মাঠপর্যায়ের ভ্যালিডেশন সম্পন্ন হয় এবং জুলাই ২০২৫-এ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। বর্তমানে এটি সক্রিয় রয়েছে এবং নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে।