ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে বিএনপি ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল। নেটিজেনদের অভিযোগ, মাত্র তিন মাস আগেও ছাত্রদল বুঝতেই পারেনি যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, অথচ জামায়াত দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পিতভাবে নিজেদের প্রার্থীদের প্রস্তুত করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির কৌশলগত ব্যর্থতার কারণে এই নির্বাচন ছাত্রদলের জন্য ভরাডুবি বয়ে এনেছে। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই জামায়াত শিবির মাঠে নামে এবং ধাপে ধাপে তরুণদের নেতৃত্বে এনে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে জয় নিশ্চিত করে। অন্যদিকে ছাত্রদল নিজেদের নেতৃত্ব ঢেলে সাজাতে ব্যর্থ হয়, যেখানে অনেক অছাত্র ও অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সচেতন নাগরিকরা ক্ষোভ ঝাড়ছেন ছাত্রদলের উপর। কেউ লিখেছেন, “যখন জামায়াত বছরজুড়ে কৌশলে প্রার্থীদের মাঠে নামিয়েছে, তখন ছাত্রদল নির্বাচনের শেষ মুহূর্তেও জানতো না তাদের প্রার্থী কারা হবে।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “একটি গুপ্ত সংগঠনের কাছে পরাজিত হয়ে বিএনপির আত্মসমর্পণ প্রমাণ করে তারা কতটা অদক্ষ।”
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, জামায়াত বিপুল অর্থ ব্যয় করে ভোট কিনেছে। কেউ কেউ বলছেন, ১৫ থেকে ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেছে তারা। তবে এর বাইরেও ছাত্রলীগের ভেতরের গুপ্ত সমর্থনও নাকি শিবিরের দিকে গেছে, এমন আলোচনাও চলছে। সব মিলিয়ে বিএনপির ভরসার জায়গা ধসে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ডাকসু নির্বাচনে এই ব্যর্থতা বিএনপির জন্য আগত জাতীয় নির্বাচনের এক অশনী সংকেত। তরুণ প্রজন্মকে পাশে না পেলে এবং ছাত্রদলকে নতুন নেতৃত্বে পুনর্গঠন না করলে জাতীয় রাজনীতিতেও একই ধরনের বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। তাদের মতে, এখনই সময় ছাত্রদলকে সম্পূর্ণ তরুণদের হাতে তুলে দিয়ে নতুন পরিকল্পনায় সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর।