বাগেরহাটের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন উত্তাল চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে একটি আসন কমে গেলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। হরতাল, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভে জেলার সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। দীর্ঘ ৫৫ বছরের পুরনো কাঠামো ভেঙে তিন আসনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্তকে তাঁরা জনগণের মতামত উপেক্ষা করার শামিল বলছেন।
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকে আজ বুধবার সকাল থেকে টানা দুই দিনের হরতাল শুরু হয়েছে। সকাল ছয়টা থেকেই জেলার বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ তৈরি করেছেন আন্দোলনকারীরা। হরতাল কর্মসূচি চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
নতুন নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিন্যাসে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনে নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে স্থানীয় সব রাজনৈতিক দলের নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই আন্দোলনের ডাক দেন।
আজ সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে মিছিল বের হয়। সকাল আটটার দিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা। সেখানে স্লোগান দিয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন—“চার আসন ফিরিয়ে না দিলে আন্দোলন চলবেই।”
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন চালু ছিল। কিন্তু গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন সীমানা প্রস্তাব দেয়, যেখানে একটি আসন বাদ দেওয়া হয়। পরে ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে তিনটি আসনের কাঠামো বহাল রাখে। এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় রাজনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জানিয়েছে, জনগণের মতামত উপেক্ষা করে আসন কমানোর এই সিদ্ধান্ত তারা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে আরও বড় কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।