থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক মহলে নতুন সঙ্কটের সৃষ্টি হলো। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে সুপ্রিম কোর্ট এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এই রায় ঘোষণা করা হয়, যা থাকসিন পরিবারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, থাকসিন পূর্ববর্তী কারাদণ্ডের সময়ের একটি বড় অংশ বেআইনি ভাবে হাসপাতালে কাটিয়েছেন। তাই এবার তাকে সরাসরি কারাগারে সময় কাটাতে হবে। এই মামলাটি মূলত পূর্ববর্তী দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে জড়িত ছিল।
থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল এই ঘটনায় দেখানো হলো, সুপ্রিম কোর্ট যে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় আনতে পারে। থাকসিন সিনাওয়াত্রার এক বছরের কারাদণ্ড শুধু তারই নয়, পুরো রাজনীতির প্রভাবশালী পরিবারের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০০১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে থাকসিন এবং তার পরিবার থাই রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছেন। তার বোন ও মেয়েও দেশের শীর্ষ নেতৃত্বে নির্বাচিত হয়েছেন, যা পরিবারটির রাজনৈতিক প্রভাবকে আরও দৃঢ় করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোন কল সংক্রান্ত একটি মামলায় থাকসিনের মেয়ে পেতংতার্ন পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। সাংবিধানিক আদালত তার নৈতিক মান লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী থাকসিনের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন তার মেয়ে পেতংতার্ন। রায় ঘোষণার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁর বাবা সম্পর্কে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও পরিবার সদস্যরা মোটামুটি ভালো মেজাজে আছেন। তিনি পরিবারের রাজনৈতিক দল ‘ফিউ থাই’কে কার্যক্রমে এগিয়ে নেবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
আরো খবর: সিরিয়ার আকাশে বিস্ফোরণ ও অ্যাম্বুলেন্সের কোলাহল, ইসরাইলি হামলা নিয়ে তীব্র নিন্দা
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের মধ্যে দুই বিচারপতি থাকসিনের বেআইনি হাসপাতালে থাকার সময়কাল নিয়ে রায় পাঠ করেছেন। আদালত জানিয়েছে, এই অবস্থার দায় শুধুমাত্র চিকিৎসকদের নয়, থাকসিন নিজেই ইচ্ছাকৃতভাবে তার হাসপাতালে থাকা সময় বৃদ্ধি করেছেন।
থাকসিন ফেসবুকে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি আদালতের রায় মেনে নিচ্ছেন। এছাড়া তিনি বলছেন যে শারীরিক ও মানসিকভাবে তিনি শক্তিশালী থাকবেন এবং পরিবারের সঙ্গে একত্রে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত আছেন।