কক্সবাজারে বাঁকখালী নদীর তীর দখলমুক্ত করতে পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে হামলা, ভাঙচুর ও বাধা দেওয়ার ঘটনায় সাবেক পৌর মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী ও আইনজীবীসহ নামীয় ২৯ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় এক হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় বিআইডব্লিউটিএ’র কক্সবাজার নদীবন্দরের পোর্ট অফিসার মো. আবদুল ওয়াকিল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় যাদের নাম রয়েছে
এজাহার অনুযায়ী, আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক ও তাঁর ভাই সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিনুল হক, ইউপি চেয়ারম্যান ও আইনজীবী আবদুল খালেক, সিআইপি আতিকুল ইসলাম, পর্যটকবাহী জাহাজ ব্যবসায়ী হোসাইন ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর হুমাইরা বেগম প্রমুখ।
কী ঘটেছিল উচ্ছেদ অভিযানে
৫ সেপ্টেম্বর সকালে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যায় যৌথ বাহিনী। এ সময় আসামিদের উপস্থিতি ও সহায়তায় ৫০-৬০ জন স্লোগান দিয়ে সরকারি কাজে বাধা দেয়। পরে মনির উদ্দিনের নেতৃত্বে ৮০০-১০০০ জন নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন ধরিয়ে আতঙ্ক ছড়ান।
আরো পড়ুন: রাজশাহী কলেজে ‘ইউনুস হটাও, হাসিনা আসবে’ লেখা পোস্টার
অভিযানের সময় বিআইডব্লিউটিএ’র আনা খননযন্ত্র ভাঙচুর করা হয় এবং চালককে মারধর করা হয়।
এর আগে ৩ ও ৪ সেপ্টেম্বর কস্তুরাঘাট ও পেশকারপাড়ায় উচ্ছেদ অভিযানে বাধার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়। তাতে নামীয় ২১ জন ও অজ্ঞাতনামা ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঐ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মী আহত হন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস খান বলেন, “আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি।” তিনি আরও জানান, বাধার কারণে শুক্রবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, হাইকোর্টের আদেশে ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত করতে যৌথ অভিযান শুরু হয়। এতে সেনাবাহিনী, র্যাব, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অংশ নেন।