বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ তার ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া এ দলটি জন্মলগ্ন থেকেই নানা ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করেও টিকে রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গণমানুষকে এক সুরে মোহিত করার ক্ষমতার কারণেই বিএনপিকে তুলনা করা যায় হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার সঙ্গে।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ গণরোষের মুখে ভেঙে পড়ে এবং শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনা প্রমাণ করেছে বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলোর ওপর চালানো নির্যাতন ও নিপীড়নের বাস্তবতা।
১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণকারী জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন এবং বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে পান “বীর উত্তম” খেতাব। স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে জাতিকে দিশা দেখানো এই সেনানায়ক ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরবর্তীতে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের নকশা উপস্থাপন করেন। তাঁর রাষ্ট্রদর্শনে ছিল গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, জাতীয় ঐক্য এবং আত্মনির্ভরশীলতার ওপর জোর।
আরো পড়ুন: আজকের রাশিফল ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যার পর বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তাঁর সহধর্মিণী খালেদা জিয়া। তিনি সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদের মতে, বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রকৃত রূপ লাভ করে মূলত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে।
ওয়ান-ইলেভেন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপি নানা ষড়যন্ত্র, হামলা-মামলা ও দমননীতির শিকার হয়েছে। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দি ছিলেন, নির্বাসনে পাঠানো হয় তারেক রহমানকে। দলকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা সত্ত্বেও বিএনপি তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থেকেছে।
বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি নতুন করে গণমানুষের কাছে ফিরে এসেছে এবং দেশজুড়ে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। দলটির দাবি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য।
ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি লেখকের ব্যক্তিগত মতামত ও বিশ্লেষণভিত্তিক। এখানে প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণই তাঁর নিজস্ব, সংবাদমাধ্যমের নয়।