চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুরে দেড় ঘণ্টা টানটান পরিস্থিতির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটসংলগ্ন জোবরা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েক শ শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেট এলাকায় অবস্থান নেন। অন্যদিকে, বিপরীত পাশে জড়ো হন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন এবং প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
এর আগে শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত একই এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের জেরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। ওই ঘটনায় অন্তত ৭০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আজকের সংঘর্ষ শুরুর আগে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন,
“বিশ্ববিদ্যালয়ের এত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। স্থানীয় সন্ত্রাসীরা প্রক্টর ও পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংঘর্ষের কারণ নিয়ে দুই পক্ষের দাবি
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটসংলগ্ন একটি ভবনে ভাড়া থাকেন এক ছাত্রী। শনিবার দিবাগত রাতে তিনি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান ছাত্রীটিকে মারধর করেন। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে দারোয়ান পালানোর চেষ্টা করেন। তখন শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আরও লোক জড়ো করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
আরো পড়ুন: চলছে চবি শিক্ষার্থী এবং গ্রামবাসীর যুদ্ধ
অন্যদিকে স্থানীয়দের দাবি, শিক্ষার্থীরাই প্রথমে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর করে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছেন, হামলাকারী স্থানীয়দের দ্রুত আইনের আওতায় আনার। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী পদক্ষেপ নেবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।