চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয় এলাকাবাসীর হামলায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গভীর রাতে শুরু হওয়া সংঘর্ষে অন্তত ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের উদাসীনতা এই সংকটকে আরও জটিল করেছে।
ঘটনার সূচনা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে দারোয়ানের সঙ্গে উত্তেজনা থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাত প্রায় বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হলে আশপাশের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারাও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়, যা ধীরে ধীরে ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা

ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের হামলায় ৬০-৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কারও মাথায় গুরুতর আঘাত, কারও শরীরে কোপের চিহ্ন, আবার কেউ ইট-পাটকেলে আহত হয়েছেন। কিছু আহত শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেলেও এখনও অনেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ
আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয়রা মাইকিং করে পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর ক্ষোভ রয়েছে, যা বারবার সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষ পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।ে
আরো দেখুন: ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই আগামী ত্রয়োদশ জতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বললেন প্রেস সচিব
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এ ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা বারবার ঘটছে। বিভিন্ন সময় সামান্য বিষয় নিয়েও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মামলা করেছে। এবারও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে শিক্ষার্থীদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি ও দাবি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভোররাত থেকে আহত শিক্ষার্থীদের আনা হচ্ছে একে একে। এখনও অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হলেও শিক্ষার্থীদের দাবি- যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতা আর না ঘটে।