মানবজাতিকে নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইলন মাস্ক বহু বছর ধরে কাজ করছেন। সেই স্বপ্নের পথে আরেকটি বড় অর্জন যোগ হলো এবার। টানা কয়েকবার ব্যর্থতার পর অবশেষে সফলভাবে আকাশে উড়লো স্পেসএক্সের মহাকাশযান স্টারশিপ।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ টেক্সাসের স্টারবেস ঘাঁটি থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে (২৩৩০ জিএমটি) আকাশে উড়ে যায় ৪০৩ ফুট (১২৩ মিটার) উঁচু স্টারশিপ। এটি ছিল রকেটটির দশম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। আর এই যাত্রাই হয়ে উঠেছে স্পেসএক্সের জন্য এক মাইলফলক।
প্রথমবারের মতো এই পরীক্ষায় মহাকাশে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা হয়েছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট। সফল উৎক্ষেপণ মাস্কের বহু প্রতীক্ষিত মঙ্গল অভিযানের স্বপ্নকে বাস্তবের আরও কাছে নিয়ে গেল। পাশাপাশি, নাসার চাঁদে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল রকেটের নতুন তাপ ঢাল (হিট শিল্ড টাইলস) কতটা শক্তিশালী, তা পরীক্ষা করা। একইসঙ্গে নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে কক্ষপথে উপগ্রহ স্থাপনের সক্ষমতাও যাচাই করা হয়েছে।
উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর পরিকল্পনা অনুযায়ী স্টারশিপের প্রথম ধাপ ‘সুপার হেভি বুস্টার’ আলাদা হয়ে যায়। সাধারণত সেটি টাওয়ারে ফিরে আসে, তবে এবার পরীক্ষার অংশ হিসেবে সেটিকে নামানো হয় মেক্সিকো উপসাগরে।
আরো পড়ুন:
ঘর থেকেই মহাকাশে সেলফি! অবিশ্বাস্য প্রযুক্তির নতুন বিপ্লব
সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ ছিল রকেটের ওপরের ধাপ। এটি মহাকাশে উঠে ভারত মহাসাগরের দিকে অগ্রসর হয়। পরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সৃষ্ট তীব্র তাপ সহ্য করে সফলভাবে সমুদ্রে অবতরণ করে। এর আগের পরীক্ষাগুলোতে এই ধাপে বারবার ব্যর্থ হয়েছিল স্পেসএক্স। এবার সেই বাঁধা অতিক্রম করতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে স্পেসএক্স প্রমাণ করলো যে তারা শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার পথও তৈরি করছে। মাস্কের লক্ষ্য এখন আরও বড়—চাঁদে নভোচারী পাঠানো এবং একদিন মানুষকে নিয়ে যাওয়া মঙ্গলে। স্টারশিপের এই সফল উড্ডয়ন সেই মহাকাব্যিক যাত্রার নতুন সূচনা।