ফুটবল শুধুমাত্র ২২ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ একটি খেলা নয়। এর সাথে জড়িত লাখো ভক্তের আবেগ, স্বপ্ন এবং অসংখ্য স্মৃতি। প্রিয় দলের সমর্থনে দর্শকরা স্টেডিয়াম ভরিয়ে তোলেন, আর কখনো কখনো সেই উপস্থিতি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয়। ফুটবল ইতিহাসে এমন কিছু ম্যাচ রয়েছে যেখানে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে দর্শক সংখ্যা।
১০ম স্থান: রিয়াল মাদ্রিদ বনাম এসি মিলান (১২৯,৬৯০ দর্শক)

১৯৫৬ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম আসরে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় পরবর্তী সময়ে এই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও এসি মিলান। ১৯ এপ্রিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৯০ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ ৪-২ গোলে জিতেছিল।
৯ম স্থান: ইস্ট বেঙ্গল বনাম মোহনবাগান (১৩১,৭৮১ দর্শক)

১৯৯৭ সালের ১ৃ জুলাই ইন্ডিয়ান ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভারতের সবচেয়ে বড় ডার্বিতে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৮১ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি এশিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড। ইস্ট বেঙ্গল ৪-১ গোলে জিতেছিল।
৮ম স্থান: ক্রুজেইরো বনাম ভিলা নোভা (১৩২,৮৩৪ দর্শক)

১৯৯৭ সালে ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস রাজ্যের প্রতিযোগিতা কাম্পেওনাতো মিনেইরোর ফাইনালে বেলো হরিজন্তের মিনেইরাও স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৩৪ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। ক্রুজেইরো ১-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়।
৭ম স্থান: বেনফিকা বনাম পোর্তো (১৩৫,০০০ দর্শক)

১৯৮৭ সালে পর্তুগিজ প্রিমেরা লিগার ম্যাচে লিসবনের এস্তাদিও দা লুজে ১ লাখ ৩৫ হাজার দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি পর্তুগালের সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড। বেনফিকা ৩-১ গোলে জিতেছিল।
আরো পড়ুন:
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের রেকর্ড: বাঁহাতি হিসেবে প্রথম ৫০০ উইকেট ও ৭০০০ রান
৬ষ্ঠ স্থান: সেল্টিক বনাম লিডস ইউনাইটেড (১৩৬,৫০৫ দর্শক)

১৯৭০ সালের ১৫ এপ্রিল চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৫ জন দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি উয়েফা আয়োজিত প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড।
৫ম স্থান: করিন্থিয়ান্স বনাম পন্তে প্রেতা (১৩৮,০৩২ দর্শক)

১৯৭৭ সালে ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের প্রতিযোগিতা কাম্পেওনাতো পলিস্তার দ্বিতীয় ফাইনালে মোরুম্বি স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩২ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। পন্তে প্রেতা ২-১ গোলে জিতে তৃতীয় ফাইনালের সুযোগ পেয়েছিল।
৪র্থ স্থান: সেল্টিক বনাম অ্যাবরডিন (১৪৭,৩৬৫ দর্শক)

১৯৩৭ সালের স্কটিশ কাপ ফাইনালে গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৫ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। সেল্টিক ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
৩য় স্থান: স্কটল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ড (১৪৯,৪১৫ দর্শক)

১৯৩৭ সালের ১৭ এপ্রিল ব্রিটিশ হোম চ্যাম্পিয়নশিপে হ্যাম্পডেন পার্কে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪১৫ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি ইউরোপের আন্তর্জাতিক ম্যাচের রেকর্ড। স্কটল্যান্ড ৩-১ গোলে জিতেছিল।
২য় স্থান: ফ্লামেঙ্গো বনাম ফ্লুমিনেন্স (১৯৪,৬০৩ দর্শক)

১৯৬৩ সালে রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ‘ফ্লা-ফ্লু ডার্বিতে’ ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬০৩ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি ক্লাব ফুটবলের বিশ্ব রেকর্ড। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল।
১ম স্থান: ব্রাজিল বনাম উরুগুয়ে (১৯৯,৮৫৪ দর্শক)

১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে মারাকানা স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৪ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন, যদিও প্রকৃত সংখ্যা ছিল ২ লাখেরও বেশি। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির ম্যাচ। উরুগুয়ে ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়।
আধুনিক যুগে পরিবর্তন
বর্তমানে নিরাপত্তা বিধি এবং আধুনিকায়নের কারণে স্টেডিয়ামগুলোর দর্শক ধারণক্ষমতা অনেক কমে গেছে। মারাকানা স্টেডিয়ামের বর্তমান ধারণক্ষমতা ৭৮ হাজার ৮৭৮ জন, যা একসময় ২ লাখেরও অধিক দর্শক ধারণ করতে পারত।
সারণি: ছোট থেকে বড় ক্রমে সর্বোচ্চ দর্শক উপস্থিতির ১০ ম্যাচ
মুখোমুখি দল | প্রতিযোগিতা ও বছর | ভেন্যু | দর্শক উপস্থিতি |
---|---|---|---|
ব্রাজিল–উরুগুয়ে | ১৯৫০ বিশ্বকাপ ফাইনাল | মারাকানা স্টেডিয়াম | ১৯৯,৮৫৪ |
ফ্লামেঙ্গো–ফ্লুমিনেন্স | ১৯৬৩ কাম্পেওনাতো কারিওকা | মারাকানা স্টেডিয়াম | ১৯৪,৬০৩ |
স্কটল্যান্ড–ইংল্যান্ড | ১৯৩৭ ব্রিটিশ হোম চ্যাম্পিয়নশিপ | হ্যাম্পডেন পার্ক | ১৪৯,৪১৫ |
সেল্টিক–অ্যাবরডিন | ১৯৩৭ স্কটিশ কাপ ফাইনাল | হ্যাম্পডেন পার্ক | ১৪৭,৩৬৫ |
করিন্থিয়ান্স–পন্তে প্রেতা | ১৯৭৭ কাম্পেওনাতো পলিস্তা | মোরুম্বি স্টেডিয়াম | ১৩৮,০৩২ |
সেল্টিক–লিডস | ১৯৭০ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল | হ্যাম্পডেন পার্ক | ১৩৬,৫০৫ |
বেনফিকা–পোর্তো | ১৯৮৭ পর্তুগিজ প্রিমেরা লিগা | এস্তাদিও দা লুজ | ১৩৫,০০০ |
ক্রুজেইরো–ভিলা নোভা | ১৯৯৭ কাম্পেওনাতো মিনেইরো ফাইনাল | মিনেইরাও স্টেডিয়াম | ১৩২,৮৩৪ |
ইস্ট বেঙ্গল–মোহনবাগান | ১৯৯৭ ইন্ডিয়ান ফেডারেশন কাপ | সল্টলেক স্টেডিয়াম | ১৩১,৭৮১ |
রিয়াল মাদ্রিদ–এসি মিলান | ১৯৫৬ চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল | বার্নাব্যু | ১২৯,৬৯০ |