সীমান্ত হত্যা এবং নিরাপত্তাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবার ঢাকায় বসছে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর এই বৈঠকে জঙ্গিবাদ, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
গত বছর আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই দ্বিতীয়বার দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা বৈঠকে বসতে চলেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকায় চলবে এই বৈঠক।
জঙ্গিবিরোধী ব্যবস্থা ও সীমান্ত নিরাপত্তা
বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশে ভারতীয় জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, সীমান্তের পরিকাঠামো এবং বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলার বিষয়টি মূলত আলোচনা হবে এই বৈঠকে। ভারত থেকে মানুষজনকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টিও আলোচনায় উঠতে পারে।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যানে দাবি করা হয়েছে যে, ৫ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারত বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে দুই হাজার ১৯৬ জনকে পাঠিয়েছে।
আরো পড়ুন: নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে হামলা আ. লীগের
এবার ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল দলজিৎ সিংহ। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
বিএসএফ জানিয়েছে, দুই দেশের আলোচনায় বিশেষভাবে নজরে থাকবে বাংলাদেশে ভারতীয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, সীমান্তের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং সীমান্ত অপরাধের মোকাবেলা।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর প্রথম বৈঠক
বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতের আশ্রয় নেওয়ার পর এটি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত দিল্লিতে বৈঠক বসে বিএসএফ এবং বিজিবির কর্তাদের।
সীমান্ত নিরাপত্তা ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বৈঠকে সীমান্ত পরিচালনা পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হবে।
দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য
১৯৭৫ সাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা নির্দিষ্ট সময় পরপর বৈঠক করে থাকেন। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতি বছর দুইবার বৈঠকের রীতি শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারির বৈঠকে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।
এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে।
অভিবাসন ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ
রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং অবৈধ অভিবাসনের বিষয়টি এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্ত এবং জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ একটি জটিল বিষয়, যা নিয়মিত আলোচনার প্রয়োজন।