ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। আসন পুনর্নির্ধারণকে ঘিরে এক শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যে, বিএনপির একজন নেত্রী অভিযোগ করেছেন, তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি কোনো গুন্ডা-বদমাশের মেলা করিনি। চাইলে আনতে পারতাম, কিন্তু ভদ্রলোক নিয়েই এসেছি। শুনানিতে নিজের বক্তব্য রাখতে দাঁড়িয়েছিলাম। অথচ আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দলের হয়ে লড়াই করলেও আজ নিজ দলের নেতাদের হাতেই এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। তার ভাষায়, “যেই নেতাদের জন্য পনেরো বছর লড়লাম, তারাই আজ আমাকে ধাক্কা দিলেন। এর আগে এমনটা কখনো হয়নি।”
আসন পুনর্নির্ধারণ প্রসঙ্গ
সদর, বিজয়নগর ও সরাইল নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের ভোটার ভারসাম্য নিয়েও তীব্র বিতর্ক রয়েছে। অভিযোগকারী নেত্রী দাবি করেন, সরাইলের সঙ্গে তিনটি ইউনিয়ন (ভূদত্ত, চণ্ডিডা ও হরষপুর) যুক্ত করা হলে ভোটার ভারসাম্য কিছুটা তৈরি হবে।
তিনি যুক্তি দেখান, ওই ইউনিয়নগুলোর জমিজমা ও দাপ্তরিক কাজ সরাইল উপজেলাতেই সম্পন্ন হয়। যাতায়াতের ক্ষেত্রেও সরাইলে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ১৫–২০ মিনিট, অথচ বিজয়নগরে যেতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।

অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ
শুনানির সময় বিএনপির অপর এক পক্ষ অভিযোগ করে, ওই নেত্রীর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, তিনি বক্তব্য রাখার সময় তার পেছনে কয়েকজন প্রতিপক্ষকে মারধর করছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত নেত্রী বলেন, “আমাকে আগে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, তারপর আমার লোকজনও পাল্টা জবাব দিয়েছে। ধাক্কার বদলে ধাক্কা আসবেই, সেটাই ঘটেছে।”
নির্বাচনের আগে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি
দলীয় অভ্যন্তরীণ এই উত্তেজনা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “শুধু সীমা নির্ধারণ শুনানিতে যদি এরকম আচরণ হয়, তাহলে নির্বাচনে কী হবে—সেটা বলা মুশকিল।”