দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান ম্যাথু ব্রিটস্কি আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অসাধারণ শুরু করেছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম চার ওয়ানডে ম্যাচে ১৫০, ৮৩, ৫৭ ও ৮৮ রানের ইনিংস খেলে তিনি ৫৪ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন।
শুধু প্রথম ইনিংসেই নয়, প্রতিটি ম্যাচেই ফিফটির মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক রানের স্রোত বজায় রেখে ব্রিটস্কি দেখিয়েছেন, ওয়ানডেতে তার আগমন কতটা মর্মস্পর্শী। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাকাইতে তিনি চূড়ান্ত এই কীর্তি স্থাপন করেন।
ক্যারিয়ারের প্রথম চার ওয়ানডেতে ক্রমশ ফিফটি ছোঁয়া ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্রিটস্কি ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন। আগের নজিরে নভজোত সিং সিধুর চার ইনিংসের মধ্যে এক ম্যাচ ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া দেখা গেছে, কিন্তু ব্রিটস্কি ধারাবাহিকভাবে চার ইনিংসেই রানের ঝড় দেখালেন।

ব্রিটস্কির অন্যান্য ফরম্যাটে শুরুটা এত উজ্জ্বল হয়নি। ২০২৩ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক, তবে ১০ ম্যাচে মাত্র এক ফিফটি, ব্যাটিং গড় ১৬.৭৭। টেস্টে অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশ সফরে; চট্টগ্রাম টেস্টে একমাত্র ইনিংসে শূন্যে আউট হন, এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি ইনিংসে ১৩ ও ১ রান।
আরো পড়ুন:
ক্যামেরন গ্রিনের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে নাম লিখলেন
তবে ওয়ানডেতে তিনি যেন নতুন মাত্রা খুঁজে পেয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক করেছিলেন ২৬ বছর বয়সে। লাহোরে ৪৭ বছর পুরানো ওয়ানডে রেকর্ড ভেঙে ১৪৮ বলে ১৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ওয়ানডে অভিষেকে ১৪৮ রানের এই রেকর্ড ছিল আগের ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ডেসমন্ড হেইন্সের।
পরবর্তী ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে করেন ৮৪ বলে ৮৩ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলভুক্ত না হওয়ায় পরবর্তী ওয়ানডেতে খেলার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয় পাঁচ মাসের বেশি।

অস্ট্রেলিয়ায় চলতি সিরিজে তিনি চারে নামলেও রানের ধারাবাহিকতা অটুট থাকে—৫৬ বলে ৫৭ রান। এছাড়া প্রথম তিন ওয়ানডেতে ২৯০ রান করে সাবেক ইংলিশ ওপেনার নিক নাইটের ২৬৪ রানের রেকর্ডও ভেঙে দেন।
ম্যাকাইতে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকা দুই উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ ওভারের শুরুতেই ক্রিজে এসে অ্যারন হার্ডির বিপক্ষে প্রথম চার বলের মধ্যে দুটি ছক্কা ও একটি চারে আত্মবিশ্বাসের উর্ধ্বমুখী সূচনা করেন। মাত্র ৪৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করে দলের অবস্থান মজবুত করেন।
যদিও শতরান আর পূর্ণ করতে পারেননি, ন্যাথান এলিসের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ১২ রান দূরে আউট হন। তবু ইতিহাসের ঠিকানা ইতোমধ্যেই তারই হয়েছে।
ব্রিটস্কির এই অনন্য শুরু ওয়ানডে ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য নতুন আশা ও উদ্দীপনার জন্ম দিয়েছে।