বর্ষার মৌসুমে দুই চাকার যানে যাতায়াত অনেক সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ ও অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যাদের বিকল্প কোনো পরিবহন নেই বা যারা মোটরসাইকেলে দীর্ঘ ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য প্রস্তুত থাকা অত্যন্ত জরুরি। শুধু বাইক নয়, চালকের ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও আরাম নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়াটারপ্রুফ গিয়ার ব্যবহার
বর্ষার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভেজা পোশাক ও অস্বস্তি। এজন্য ওয়াটারপ্রুফ জ্যাকেট, রেইনকোট কিংবা রেইন লাইনার ব্যবহার করা প্রয়োজন। বাজেট সীমিত হলে সাধারণ রেইনকভারও কাজে আসবে। তবে পোশাক যেন ঢিলেঢালা না হয়, আবার খুব টাইটও না হয়—যাতে চলাফেরায় অসুবিধা না হয় এবং বাতাসে উড়ে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি না করে। শুকনো ও উষ্ণ থাকা মানেই মনোযোগী ও নিরাপদ ড্রাইভিং।

জুতার সুরক্ষা
বেশিরভাগ রাইডার বুটের গুরুত্ব কম দেন। অথচ ভেজা পায়ে দীর্ঘক্ষণ বাইক চালানো কষ্টদায়ক ও অস্বস্তিকর। তাই মানসম্মত ওয়াটারপ্রুফ বুট ব্যবহার করা ভালো। দাম বেশি হলে বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী ওয়াটারপ্রুফ শু-কভারও ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরো পড়ুন:
Royal Enfield Meteor 350 (Supernova): এখন বাংলাদেশে, দাম ৫ লাখ ৮ হাজার টাকা
দৃশ্যমানতা বাড়ান
বৃষ্টি মানেই আলো কমে যাওয়া ও দৃশ্যমানতার ঘাটতি। এজন্য গাঢ় রঙের পরিবর্তে উজ্জ্বল রঙের রেইনকোট ব্যবহার করলে অন্য গাড়িচালক সহজেই আপনাকে দেখতে পাবেন। বিকল্প হিসেবে রিফ্লেক্টিভ স্ট্রিপযুক্ত পোশাকও কার্যকর হতে পারে।
হেলমেট ও ভিসর ব্যবহারে সতর্কতা
বৃষ্টির দিনে টিনটেড বা কালো ভিসর ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। পরিষ্কার ভিসর বেশি আলো ঢুকতে দেয় এবং সামনে রাস্তা ভালোভাবে দেখা যায়। যাত্রার আগে ভিসর পরিষ্কার রাখা জরুরি। পুরনো বা আঁচড় পড়া ভিসর থাকলে বর্ষার আগে পরিবর্তন করা ভালো। মনে রাখতে হবে, সাধারণ মোম বা অনুপযুক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করলে ভিসর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
হেলমেট ফগিং প্রতিরোধ
বর্ষায় ভিজে গরম বাতাসের কারণে হেলমেটের ভিসর ঝাপসা হয়ে যায়। অনেক সময় সামান্য ফাঁক রেখে ভিসর খোলা যায়, কিন্তু এতে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়ে। এর ভালো সমাধান হলো পিন-লক ভিসর, যা ফগিং ঠেকায়। দাম তুলনামূলক বেশি হলেও এটি কার্যকর। কম বাজেটে অ্যান্টি-ফগ সলিউশন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই হেলমেটের জন্য উপযোগী হতে হবে।

ভিসর পরিষ্কার রাখা
সবসময় একটি শুকনো মাইক্রোফাইবার কাপড় সঙ্গে রাখুন। কাদা বা ময়লা জমে গেলে আগে পানি ঢেলে পরিষ্কার করে তারপর মুছতে হবে, নাহলে ভিসরে আঁচড় পড়তে পারে।
শেষকথা
বর্ষায় মোটরসাইকেল চালানো নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং, তবে যথাযথ প্রস্তুতি নিলে যাত্রা হবে অনেকটা নিরাপদ ও আরামদায়ক। সঠিক গিয়ার, পরিষ্কার ভিসর ও দৃশ্যমানতা নিশ্চিত করাই বর্ষাকালে রাইডিংয়ের মূল কৌশল।