এক এক করে ৮টি বছর চলে গেল। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান দুই বাংলার বর্ষীয়ান অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। ৭৫ বছরের জীবনে চলচ্চিত্র জগতে তার ৫০ বছরের অবদানের ঋণ কখনোই শোধ করা যাবে না। অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী সিনেমা দর্শকের মনে চিরস্থায়ী হয়ে আছে, যা নায়করাজকেও আজীবন বেঁচে রাখবে।
মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশেষ আয়োজন নেই
সিলেটের নতুন ডিসি সারওয়ার আলম জানালেন, বিএফডিসিতে প্রতিষ্ঠিত কোনো সমিতি নায়করাজের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ কোনো আয়োজন করছে না। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যম নায়করাজের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। বিশেষ করে কয়েকটি টিভি চ্যানেল বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ছোট ছেলে সম্রাটের কথা
নায়করাজের ছোট ছেলে, চিত্রনায়ক সম্রাট, বলেন: দিন যত যাচ্ছে জন্মদিনের উচ্ছ্বাস কমে যাচ্ছে। প্রয়াণ দিবস তো কেউ মনে রাখে না। একটা সময় আব্বুর জন্মদিনে বড় পার্টি হতো। এখনো পরিবারের সঙ্গে আব্বুর প্রয়াণ দিবস আমরা নিজেদের মতো করে পালন করি। আমি সবসময়ই আব্বুর কবরের কাছে যাই। শুধু দোয়া করি, আল্লাহ যেন আমার আব্বুকে বেহেশত নসিব করেন।
চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা
রাজ্জাক চলচ্চিত্রে ১৯৬৬ সালে ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেন। পরবর্তীতে তিনি প্রিমিয়াম নায়ক হিসেবে কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়েছেন, যেমন:
- কাগজের নৌকা
- রংবাজ
- আমার জন্মভূমি
- স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা
- ঝড়ের পাখি
- আলোর মিছিল
- অবুঝ মন
- অনন্ত প্রেম
- রজনীগন্ধা
- চাপা ডাঙ্গার বউ
এবং আরও অসংখ্য সিনেমা।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
নায়করাজ মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন:
- ১৯৭৬ – কী যে করি
- ১৯৭৮ – অশিক্ষিত
- ১৯৮২ – বড় ভালো লোক ছিল
- ১৯৮৪ – চন্দ্রনাথ
- ১৯৮৮ – যোগাযোগ
এছাড়া, ২০১৩ সালে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার ও ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান। তিনি বাচসাস, মেরিল-প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। পাশাপাশি, ইউনিসেফের জনসংখ্যা-বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করাও তার জীবনের উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
চিরস্মরণীয় নায়করাজ
নায়করাজ রাজ্জাক বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক অমর নাম। তার অভিনীত সিনেমা, দৃষ্টান্তমূলক চরিত্র ও অর্জিত পুরস্কার তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের চিরস্মরণীয় নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।