Thursday, August 21, 2025
Homeডাকসু নির্বাচনে ৫ প্যানেলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ডাকসু নির্বাচনে ৫ প্যানেলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর স্পষ্ট হয়েছে যে এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পাঁচটি প্যানেলের মধ্যে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় ক্যাম্পাসজুড়ে এখন নির্বাচনের আমেজ তৈরি হয়েছে।

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ২৬ আগস্ট বিকেল ৪টায়। তার আগে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। আর ভোটের দিন ৯ সেপ্টেম্বরের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে।

মনোনয়ন জমা ও প্রার্থীর সংখ্যা

বুধবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ভিড় করেন প্রার্থীরা। প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮ পদে মোট ৫০৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। যদিও শিক্ষার্থীরা ৬৫৮টি মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন, যার মধ্যে ১৪৯টি জমা হয়নি।

হল সংসদে ২৩৪টি পদে মোট ১ হাজার ৪২৭টি মনোনয়ন বিক্রি হয়েছিল, জমা পড়েছে ১ হাজার ১০৯টি।

সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ডাকসুর শীর্ষ তিন পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই পাঁচ প্যানেলের মধ্যে—

  • জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
  • বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ (গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত)
  • প্রতিরোধ পর্ষদ (বামপন্থী সাত সংগঠন)
  • স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য
  • ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট (ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত)

এসব প্যানেলের রয়েছে নিজেদের ভোটব্যাংক ও আন্দোলনে সক্রিয় পরিচিত মুখ।

পাঁচ প্যানেলের প্রার্থী তালিকা

  • ছাত্রদল: ভিপি পদে মো. আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম, এজিএস পদে তানভীর আল হাদী মায়েদ।
  • বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ: ভিপি পদে আব্দুল কাদের, জিএস পদে মো. আবু বাকের মজুমদার, এজিএস পদে আশরেফা খাতুন।
  • প্রতিরোধ পর্ষদ: ভিপি পদে শেখ তাসনিম আফরোজ, জিএস পদে মেঘমল্লার বসু, এজিএস পদে জাবির আহমেদ জুবেল।
  • স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য: ভিপি পদে উমামা ফাতেমা, জিএস পদে কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন; এজিএস পদে জাহেদ আহমেদ।
  • ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট (শিবির): ভিপি পদে মো. আবু সাদিক কায়েম, জিএস পদে এস এম ফরহাদ, এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান।

আলোচনায় প্রার্থীদের ভূমিকা ও ভাবমূর্তি

ক্যাম্পাসের আড্ডাস্থল, পাঠকক্ষ ও ক্যানটিনে এখন আলোচনার কেন্দ্র ডাকসু নির্বাচন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ আমলের মতো গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতিতে তারা ফিরতে চান না। বরং তারা এমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছেন, যারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন।

আরো পড়ুন:

প্রবাসীদের জন্য সুখবর: পাসপোর্ট ছাড়াই ভোটার তালিকাভুক্তির সুযোগ

সর্বজনীনতায় জোর

প্যানেলগুলোতে নারী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। শিবির তাদের প্যানেলে চাকমা সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী ও চারজন ছাত্রীকে জায়গা দিয়েছে। ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ও প্রতিরোধ পর্ষদেও রয়েছে সংখ্যালঘু ও নারী প্রার্থীদের উপস্থিতি।

আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ

মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় কিছু প্রার্থী মিছিল বা দলবদ্ধভাবে কার্যালয়ে গেছেন। যদিও আচরণবিধিতে তা নিষিদ্ধ। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ অভিযোগ করেছে, ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তবে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্র সতর্ক করা হয়েছে।

অভ্যন্তরীণ কোন্দল

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের মধ্যে একাধিক পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন। এ নিয়ে কোন্দল তৈরি হয়েছে, এমনকি কেউ কেউ সংগঠন থেকে পদত্যাগও করেছেন।

শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এস এম রাফিজুল ইসলাম বলেন, “এবার একক প্যানেল জিতবে না। ব্যক্তি ইমেজ ও কাজের দক্ষতা দেখেই ভোট দেব। গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি আর ফিরবে না—এমন প্রতিশ্রুতি যার থাকবে, শিক্ষার্থীরা তাকেই বেছে নেবেন।”

পরিশেষে: মনোনয়ন জমা শেষে ডাকসু নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠছে পাঁচ প্যানেলের মধ্যে। শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করছেন এমন নেতৃত্বের, যারা রাজনীতির আধিপত্য নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবেন।

সূত্র

Ratan Datta
Ratan Datta
আমি রতন দত্ত "স্টার শান্ত" ওয়েবসাইটে ম্যানেজিং ও এডিটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছি। আমি খেলাধুলা, অটোমোবাইল, বিনোদন ও বিভিন্ন বিষয় লেখালেখি করি এবং আমার লক্ষ্য আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সহজে বোঝানো।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ নিউজ