চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি সোমবার ভারত সফরে আসেন এবং তাঁর ভারতীয় সমকক্ষ এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ওয়াং ইয়ি বলেন, “প্রচণ্ড চাপ ও বাধার” মধ্যেও ভারত ও চীনের উচিত সহযোগিতা বাড়ানো এবং বিশ্বকে স্থিরতা দেওয়া।
চীনের এই মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন, বিশেষ করে রাশিয়ার কাঁচা তেল কেনার কারণে।
জয়শঙ্করের দৃষ্টিকোণ: সম্পর্কের উন্নতির আগ্রহ
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, “দুই প্রতিবেশী এখন উন্নত সম্পর্কের পথে এগোতে চায়।” তিনি আরও যোগ করেন, “ভিন্নমতকে সংঘর্ষে পরিণত হতে দেওয়া যাবে না, প্রতিযোগিতাকে দ্বন্দ্বে রূপ নিতে দেওয়া যাবে না।”
জয়শঙ্করের আশা, এই আলোচনা ভারত-চীন সম্পর্ককে স্থিতিশীল ও সহযোগিতামূলক দিকনির্দেশনা দেবে।
সীমান্ত সমস্যা ও শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি
ওয়াং ইয়ি প্রথমবারের মতো তিন বছরের মধ্যে ভারত সফর করছেন। তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে সীমান্ত বিতর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আরো পড়ুন:
পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠক আয়োজনের কাজ শুরু করলেন ট্রাম্প
এই সফরের মাধ্যমে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত হবে, যা শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটের সময় অনুষ্ঠিত হবে।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ভারতীয় রপ্তানিদাতাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। চীনের সফর ও বৈঠকগুলো সময়োপযোগী কারণ এটি ভারতের ব্যবসায়ীদের চীনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
সম্প্রতি কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও দেখা গেছে। চীনা ইউরিয়া রপ্তানি সহজ হয়েছে, এবং ভারত পুনরায় চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা চালু করেছে। প্রযুক্তি স্থানান্তরের মতো ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়ছে।
পাঁচ বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ভারত-চীনের সম্পর্ক শিখরের নিচে নেমেছিল। তবে সাম্প্রতিককালে ধীরে ধীরে পুনর্মিলনের লক্ষণ দেখা গেছে।
উভয় দেশই এখন পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ভারত-চীনের সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের দেখায়, কৌশলগত ও বাণিজ্যিক চাপ থাকা সত্ত্বেও কূটনৈতিক সংলাপ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ব্যবসায়ী হোন বা সাধারণ পাঠক, এই সম্পর্কের উন্নতি আপনাদের জীবন ও অর্থনীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনার মতামত জানাতে পারেন: আপনি কীভাবে ভাবছেন, ভারতের কৌশল ও চীনের প্রত্যাশার মধ্যে সমন্বয় কীভাবে হবে?
Disclaimer: এই আর্টিকেলটি বিশ্লেষণমূলক এবং তথ্যভিত্তিক। সমস্ত তথ্য বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি কোনও বিনিয়োগ পরামর্শ নয়।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস