বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে টেলিস্কোপে ভর করে মহাবিশ্বের রহস্য খুঁজে বের করলেও, আবিষ্কারের গতি ছিল ধীর। কিন্তু এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বদলে দিচ্ছে মহাকাশ অনুসন্ধানের ধারা। অস্বাভাবিক নক্ষত্র বিস্ফোরণ থেকে শুরু করে কৃষ্ণগহ্বরের মিথস্ক্রিয়া-সবকিছুই তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে বিশেষ এআই টুলের মাধ্যমে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি নতুন ধরনের নক্ষত্র বিস্ফোরণের ঘটনা রেকর্ড করেছেন, যা মহাজাগতিক গবেষণায় যুগান্তকারী অগ্রগতি এনে দিয়েছে।
মহাকাশ অনুসন্ধানে এআই-এর নতুন বিপ্লব
আগে যেখানে টেলিস্কোপে পর্যবেক্ষণের পর গবেষণা সম্পূর্ণ করতে অনেক সময় লেগে যেত, এখন এআই দ্রুতগতিতে কোটি কোটি তথ্য বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ফলে নক্ষত্র বিস্ফোরণের মতো বিরল ঘটনা সহজেই ধরা পড়ছে।
নক্ষত্র বিস্ফোরণের রহস্য উন্মোচন
২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার Zwicky Transient Observatory থেকে শনাক্ত হওয়া SN 2023jkd নামের একটি নক্ষত্রে অস্বাভাবিক বিস্ফোরণ ধরা পড়ে। প্রায় ৭৩০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের এই বিস্ফোরণকে এআই টুল রিয়েল-টাইমে শনাক্ত করে বিজ্ঞানীদের চমকে দেয়।
আরো পড়ুন: Perplexity এখন সরাসরি লাইভ ইয়ার্নিং কল ট্রান্সক্রিপশন দিচ্ছে ভারতীয় স্টকগুলোর জন্য
কৃষ্ণগহ্বরের সঙ্গে নক্ষত্রের মিথস্ক্রিয়া
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আগেই ওই বিশাল নক্ষত্র একটি কৃষ্ণগহ্বরের কক্ষপথে আটকে ছিল। কৃষ্ণগহ্বরের টানে নক্ষত্র ভেঙে যায় এবং প্রাকৃতিক মৃত্যু ঘটার আগেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এআই বিশ্লেষণে পাওয়া প্রমাণ বলছে, বিস্ফোরণের আগের কয়েক বছর ধরে নক্ষত্রটি বারবার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, যা আগে এত পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি।
নতুন শ্রেণির বিস্ফোরণ আবিষ্কার
প্রথমে ঘটনাটি সাধারণ সুপারনোভা বলে মনে হলেও, পরবর্তী পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন শ্রেণির। এআই-এর সাহায্যে পাওয়া প্রমাণে ইঙ্গিত মিলছে-এটি হতে পারে লুকানো বিস্ফোরণের এক নতুন ধরণ, যা এখনো বিজ্ঞানে বিস্তারিতভাবে নথিভুক্ত হয়নি।
ভবিষ্যতের গবেষণায় এআই-এর ভূমিকা
গবেষকরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে Vera C. Rubin Observatory এর মতো টেলিস্কোপ এআই টুল ব্যবহার করে আরও জটিল মহাজাগতিক ঘটনা শনাক্ত করবে। এতে বিশাল তারার জীবনচক্র, বাইনারি সিস্টেম ও কৃষ্ণগহ্বরের মিথস্ক্রিয়া নিয়ে অভূতপূর্ব তথ্য পাওয়া যাবে।

