ফুটবলের জগতে কিছু প্রশ্ন থাকে যার উত্তর দেওয়া সত্যিই কঠিন। তার মধ্যে একটি হলো – আর্জেন্টিনার সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? বেশিরভাগ মানুষের কাছেই এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো লিওনেল মেসি আর ডিয়েগো ম্যারাডোনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু আনহেল দি মারিয়াকে যখন আর্জেন্টিনার সেরা পাঁচজন ফুটবলারের নাম বলতে বলা হলো, তখন তার কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেল।
আর্জেন্টিনার সেরা পাঁচ ফুটবলার কে?
৩৭ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি উইঙ্গার সম্প্রতি আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘লা নাসিওন’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার পছন্দের তালিকা প্রকাশ করেছেন। রোজারিও সেন্ট্রালের অনুশীলন মাঠে বসে দি মারিয়া যে নামগুলো বেছে নিয়েছেন, তা নিয়ে অবশ্যই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠবে।
প্রথম তিন স্থান – কোনো দ্বিধা নেই
দি মারিয়ার প্রথম তিনটি পছন্দে কোনো দ্বিধা ছিল না। প্রশ্নকর্তা যখন মেসির নাম বললেন, তিনি সাথে সাথেই বললেন, “হ্যাঁ, অবশ্যই।” ম্যারাডোনার নাম আসতেই একই উত্তর – “তিনিও, অবশ্যই।” তৃতীয় স্থানে রাখলেন মারিও কেম্পেসকে, যিনি ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
শেষ দুই স্থান নিয়ে দ্বিধা
কিন্তু শেষ দুই স্থান নিয়ে দি মারিয়া খানিকটা চিন্তায় পড়ে গেলেন। অবশেষে চতুর্থ স্থানে রাখলেন ড্যানিয়েল প্যাসারেলাকে, যিনি ১৯৭৮ এবং ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন।
পঞ্চম স্থানের জন্য দি মারিয়া বেছে নিলেন বর্তমান প্রজন্মের একজন খেলোয়াড়কে – রদ্রিগো দি পল। তার মতে, “জাতীয় দলের পুরো প্রকল্পে রদ্রি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলকে সে জীবনের সঞ্চার করে! সবাই তাকে মাঠের ভেতরে ‘ইঞ্জিন’ বললেও মাঠের বাইরেও সে তা-ই।”
আরো পড়ুন:
ধোনি কি ভারতের কোচ হবেন? ক্রিকেটপ্রেমীদের বড় প্রশ্ন
সবচেয়ে কম বলে ১০ ছক্কা: জর্ডান কক্সের বিস্ময়কর রেকর্ড
পাকিস্তান সরে দাঁড়ানোয় এশিয়া কাপ হকিতে জায়গা পেল বাংলাদেশ
নিজেকে তালিকায় না রাখার কারণ
অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, দি মারিয়া নিজেকে এই তালিকায় রাখলেন না কেন? বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা আর ফিনালিসিমা জেতা এই তারকার কাছে র্যাঙ্কিংয়ের চেয়ে মানুষের ভালোবাসাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তার নিজের ভাষায়, “যা যা জেতার প্রায় সবই জিততে পারাটা আমার পুরস্কার। আমি পূর্ণ এবং তাতে সুখী। লোকে চাইলে আমাকে শীর্ষ তিনে, পাঁচে, দশে কিংবা যেখানে খুশি রাখতে পারে। যতদিন তারা আমাকে ভালোবাসেন, ততদিন পর্যন্ত র্যাঙ্কিং আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
ইউরোপিয়ান ফুটবলে সোনালি অধ্যায় শেষ করে দি মারিয়া এখন ফিরেছেন জন্মভূমিতে। গত মে মাসে বেনফিকা ছেড়ে যোগ দিয়েছেন শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে। ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যোগ দেওয়া এই কিংবদন্তির সাথে ক্লাবটি প্রাথমিকভাবে ১২ মাসের চুক্তি করেছে, তবে পরে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগও রয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
খেলোয়াড়ী জীবনের পর কী করবেন, এই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন দি মারিয়া। তিনি জানিয়েছেন যে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কোচিং স্কুলে কোর্স করছেন। তবে খেলা ছাড়ার সাথে সাথেই কোচিং শুরু করবেন, এমনটা নয়।
তার মতে, “হ্যাঁ ইচ্ছা তো আছেই, কিন্তু সেটা কবে, কয়েক বছরের মধ্যে নাকি বছর দশেক লাগবে, জানি না। তবে ওই নামটা (কোচ) পছন্দের এবং বাকিটা পরে দেখা যাবে।”
গত বছর কোপা জয়ের পর আর্জেন্টিনা জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া এই কিংবদন্তি এখন শুধুমাত্র ক্লাব ফুটবলে মনোনিবেশ করতে চান। রিয়াল মাদ্রিদ, পিএসজি আর বেনফিকায় যে জাদু দেখিয়েছেন, এখন সেই জাদু দেখাতে চান নিজের মাতৃভূমিতে।
ডিসক্লেমার: এই আর্টিকেলটি বিভিন্ন অনলাইন সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত।