৯ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা ষান্মাসিক মূল্যায়ন নমুনা প্রশ্ন ও উত্তর ২০২৪
এটি একটি নমুনা প্রশ্ন তাই বই পড়ার পাশা পাশি এটি পড়বেন। আপনাদের এই রকম প্রশ্ন ও উত্তর আসতে পারে তবে হুবহু না।
তাই পরিক্ষার আগের রাতে সময় মত প্রশ্ন ও উত্তরপত্র একই সাথে পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের টেলিগ্রাম, ফেসবুক বা হোয়াটসআ্যাপ ফলো করে রাখুন। অথবা আমাদের ওয়েবসাইটটি সেভ করে রাখুন।
আমরা আপনাদের জন্য সকল প্রশ্ন ও উত্তরপত্র একই সাথে একটি মাত্র পোস্টে দিয়ে থাকি। তাই আপনি খুব সহজেই প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পেয়ে যাবেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে। আর আপনাকে অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করতে হবে না।
ষান্মাসিক মূল্যায়ন ২০২৪
ইসলাম শিক্ষা
নবম শ্রেণি
নমুনা প্রশ্ন ও উত্তর
কাজ ১: প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়
• তোমার চারপাশের এলাকায় প্রাকৃতিক বা সামাজিক পরিবেশে কী কী বিরূপ চিত্র (দুর্যোগ) দেখতে পাও তা চিন্তা করে দেখ। এবার তোমার দুইজন বন্ধুর কাছ থেকে শুনে নাও তারা চিন্তা করে প্রাকৃতিক বা সামাজিক কী কী বিরূপ চিত্র (দুর্যোগ) খুঁজে পেলো। আলোচনা করে এ বিষয়ে তাদের ভাবনা জেনে নিয়ে ছকে লিখো।
• তোমরা দুর্যোগের সময় কী ধরণের ইসলামের বিধি বিধান চর্চা বা অনুশীলন করে থাকো, আলোচনা করে লিখো। নমুনা ছক:
আমি যা খুঁজে পেলাম | ১ম বন্ধু যা খুঁজে পেলো | ২য় বন্ধু যা খুঁজে পেলো |
---|---|---|
উত্তর কাজ ১: প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়
আমি যা খুঁজে পেলাম | ১ম বন্ধু যা খুঁজে পেলো | ২য় বন্ধু যা খুঁজে পেলো | |
---|---|---|---|
প্রাকৃতিক দুর্যোগ | বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প | বন্যা, ভূমিধস | ঘূর্ণিঝড়, বজ্রপাত |
সামাজিক প্রভাব | আতঙ্ক, সম্পদের ক্ষতি, জীবনহানি | গৃহহীনতা, খাবার ও পানির অভাব, অসুস্থতা | আশ্রয়হীনতা, পানি ও বিদ্যুতের সংকট |
ইসলামের বিধি-বিধান | আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা, নিয়মিত নামাজ, দোয়া, সাহায্য করা | কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, পরিবার ও প্রতিবেশীকে সাহায্য | দান-খয়রাত, ধৈর্য, নিয়মিত নামাজ, সান্ত্বনা |
কাজ ২: সমস্যা খুঁজে বের করি
• তোমার বন্ধুদের চিহ্নিত প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের ফলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বলে তুমি মনে করো।
• এসব প্রাকৃতিক বা সামাজিক দুর্যোগ থেকে তুমি ইসলামের দৃষ্টিতে কি শিক্ষা খুঁজে পাও তা উল্লেখ করো।
উত্তর কাজ ২: চিহ্নিত প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের ফলে সম্ভাব্য সমস্যা
প্রাকৃতিক দুর্যোগ | সম্ভাব্য সমস্যা |
---|---|
বন্যা | গৃহহীনতা, পানিবাহিত রোগ, খাদ্য ও পানির সংকট, ফসলের ক্ষতি |
ঘূর্ণিঝড় | ঘরবাড়ি ধ্বংস, আশ্রয়হীনতা, বিদ্যুৎ ও পানির সংকট, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন |
ভূমিকম্প | গৃহধ্বংস, প্রাণহানি, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত |
ভূমিধস | গৃহহীনতা, রাস্তা বন্ধ, খাদ্য ও পানির সংকট |
বজ্রপাত | প্রাণহানি, সম্পদের ক্ষতি |
ইসলামের দৃষ্টিতে শিক্ষা
প্রাকৃতিক এবং সামাজিক দুর্যোগ থেকে আমরা ইসলামের দৃষ্টিতে বিভিন্ন মূল্যবান শিক্ষা পাই। এগুলো নিম্নরূপ:
1. আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা:
যে কোন প্রকার দুর্যোগে আমাদের আল্লাহর উপর ভরসা রাখা উচিত এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত। যেমনটি কুরআনে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৩)
2. ধৈর্য এবং সহনশীলতা:
দুর্যোগের সময় ধৈর্যধারণ করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। এটি আমাদের মানসিক শক্তি বাড়ায় এবং বিপদ মোকাবিলায় সহায়তা করে।
3. একতা এবং সহমর্মিতা:
দুর্যোগের সময় আমাদের একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো এবং সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত। হাদিসে বলা হয়েছে, “মুসলিমরা একে অপরের ভাই।”
4. দান এবং সাহায্য করা:
দুর্যোগকবলিত মানুষদের সাহায্য করা এবং তাদের প্রতি উদারতা দেখানো ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা একে অপরকে নেকি এবং তাকওয়ার উপর সাহায্য করো।” (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ২)
5. আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা:
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদেরকে আল্লাহর শক্তি এবং সৃষ্টির উপর মনোযোগ দেয়। এটি আমাদেরকে আল্লাহর ক্ষমতা এবং আমাদের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।
কাজ ৩: সমস্যা সমাধানের ইসলামের নির্দেশনার আলোকে করণীয় নির্ধারন
চারজন বন্ধুর সাথে আলোচনা করে দুর্যোগপূর্ণ বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইসলামের বিধিবিধান অনুযায়ী আমার/আমাদের করণীয় কী তা ছকে লিখে উপস্থাপন।
ইসলামের বিধিবিধান | আমার/আমাদের করণীয় | চর্চা/অনুশীলনের কৌশল |
---|---|---|
উত্তর কাজ ৩:
ইসলামের বিধিবিধান | আমার/আমাদের করণীয় | চর্চা/অনুশীলনের কৌশল |
---|---|---|
ধৈর্য এবং স্থিতিশীলতা | ধৈর্য ধারণ করা | প্রতিদিনের ছোট ছোট বিষয়েও ধৈর্য ধারণের চর্চা করা |
দোয়া ও আল্লাহর ওপর নির্ভরতা | নিয়মিত দোয়া করা এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা | পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি বিশেষ দোয়া ও নফল ইবাদত করা |
সামাজিক সংহতি এবং সহমর্মিতা | একে অপরের পাশে থাকা এবং সহযোগিতা করা | বন্ধু ও পরিবারের মাঝে ছোট ছোট সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা, যেমন খাবার বিতরণ |
কাজ ৪: মানুষ ও প্রকৃতির কল্যাণ
তোমাদের করণীয়গুলোর আলোকে নিম্নোক্ত ছক অনুযায়ী কীভাবে কল্যাণ করতে পার তা বিশ্লেষণ কর। নমুনা ছক:
অভিমতগুলোকে শ্রেণিকরণ
ব্যক্তি জীবনের কল্যাণ | ধর্মীয় জীবনের কল্যাণ | সৃষ্টিজগতের কল্যাণ |
---|---|---|
উত্তর কাজ ৪: করণীয়গুলোর আলোকে কল্যাণ বিশ্লেষণ
ব্যক্তি জীবনের কল্যাণ | ধর্মীয় জীবনের কল্যাণ | সৃষ্টিজগতের কল্যাণ | |
---|---|---|---|
করণীয় | ব্যক্তি জীবনের কল্যাণ | ধর্মীয় জীবনের কল্যাণ | সৃষ্টিজগতের কল্যাণ |
আল্লাহর উপর ভরসা রাখা | মানসিক শক্তি বৃদ্ধি, ভীতি ও উদ্বেগ কমানো | ইমান মজবুত করা, আধ্যাত্মিক শান্তি অর্জন | সৃষ্টিকর্তার প্রতি শ্রদ্ধা বৃদ্ধি, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন |
ধৈর্য এবং সহনশীলতা | মানসিক স্থিতিশীলতা, সংকট মোকাবেলার ক্ষমতা বাড়ানো | ধৈর্য ও সহনশীলতার আদর্শ অনুসরণ, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন | মানবিক সম্পর্ক মজবুত করা, সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা |
একতা এবং সহমর্মিতা | সামাজিক সমর্থন, বিপদে সাহায্য পাওয়া | উম্মাহর সাথে সংযোগ বাড়ানো, সহযোগিতা ও ঐক্য বৃদ্ধি | সামাজিক সংহতি, একত্রে কাজ করার মানসিকতা |
দান এবং সাহায্য করা | আত্মতুষ্টি ও প্রশান্তি, সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি | আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ, জান্নাতের পথ সুগম করা | সমাজের দুর্বলদের সহায়তা, বৈষম্য হ্রাস, মানবিক উন্নয়ন |
আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা | পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ | আল্লাহর সৃষ্টির প্রশংসা করা, তাওহিদের মর্ম উপলব্ধি করা | প্রকৃতি সংরক্ষণ, পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ, টেকসই উন্নয়ন |
কাজ ৫: প্রতিবেদন লিখি
উপরের কাজগুলো মানুষ কোন বিশ্বাস থেকে করবে ইসলামের বিধিবিধান ও নির্দেশনার আলোকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করো।
প্রতিবেদনের শিরোনামঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ইসলামের বিধিবিধান ও নির্দেশনা প্রতিবেদকের নামঃ প্রতিবেদকের ঠিকানাঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ইসলামের বিধিবিধান ও নির্দেশনা
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও চ্যালেঞ্জিং ঘটনা। এসময় আমরা অনেক ধরনের বিপর্যয় ও সমস্যার সম্মুখীন হই। ইসলামের বিধি-বিধান ও নির্দেশনার আলোকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে শান্তি এবং কল্যাণ আনতে পারি। নিম্নে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলো।
দুর্যোগের সময় করণীয়ঃ
১. আল্লাহর উপর ভরসা রাখাঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদের সর্বপ্রথম করণীয় হলো আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, এর উপর ভরসা রাখে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” (সূরা আত-তালাক, ৬৫:৩) এর মাধ্যমে আমরা মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে পারি এবং যে কোন প্রকার আতঙ্ক ও উদ্বেগ দূর করতে পারি। আল্লাহর উপর ভরসা রাখা আমাদের ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধৈর্যশীল
২. একতা এবং সহমর্মিতাঃ
দুর্যোগের সময় আমাদের একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো এবং সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত। হাদিসে বলা হয়েছে, “মুসলিমরা একে অপরের ভাই।” একে অপরের পাশে থেকে আমরা দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারি এবং সমাজে একতা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি।
৩. দান এবং সাহায্য করাঃ
ইসলামে দান ও সাহায্য করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্যোগকবলিত মানুষদের সাহায্য করা এবং তাদের প্রতি উদারতা দেখানো আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা একে অপরকে নেকি এবং তাকওয়ার উপর সাহায্য করো।” (সূরা আল-মায়িদা, ৫:২)
৪. আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতনতাঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সচেতন হতে এবং এর প্রতি যত্নশীল হতে শেখায়। আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতন হয়ে আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারি। এটি আমাদের সৃষ্টিজগতের কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ইসলামের বিধি-বিধান অনুসরণ করে আমরা আমাদের ব্যক্তি জীবন, ধর্মীয় জীবন এবং সৃষ্টিজগতের কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারি। আল্লাহর উপর ভরসা রাখা, ধৈর্য ধারণ করা, একতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা, দান ও সাহায্য করা এবং আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে আমরা একটি সুশৃঙ্খল ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করতে পারি। ইসলামের এই শিক্ষা ও নির্দেশনা আমাদের জীবনের সকল দিককে আলোকিত করতে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদেরকে সহায়ক হতে পারে।
Hey people!!!!!
Good mood and good luck to everyone!!!!!