বাংলাদেশের প্রবাসী আয় নতুন ইতিহাস গড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে এসেছে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ২৪% এর বেশি। শুধু তাই নয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৩০.৩২ বিলিয়ন ডলারে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই প্রবৃদ্ধি একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছে, তেমনি পরিবারগুলোর ক্রয়ক্ষমতাও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
৮ মাসেই রেকর্ড প্রবৃদ্ধি, রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৪% এর বেশি
চলতি বছরের প্রথম আট মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে এসেছে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশে এসেছে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪.৩৬ শতাংশ বা প্রায় ৪২০ কোটি ডলার বেশি।
ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে প্রবাসী আয়
গত বছর একই সময়ে দেশে এসেছিল ১ হাজার ৭২৫ কোটি ৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হওয়া এবং প্রবাসী আয়কে উৎসাহিত করতে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের ফলেই এই প্রবৃদ্ধি এসেছে।
অতীতের তুলনায় রেকর্ড
২০২২ সালের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে রেমিট্যান্স ছিল ১ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার। আর ২০২৩ সালের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৪৬৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ, টানা দুই বছর কিছুটা স্থবিরতার পর ২০২৪ ও ২০২৫ সালে প্রবাসী আয়ে চমকপ্রদ উল্লম্ফন দেখা গেছে।
আগস্টে ২৪২ কোটি ডলার
চলতি বছরের আগস্ট মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে এসেছে ৫২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকে ৩০ কোটি ১৯ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকে ১৫৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোতে এসেছে ১ কোটি ৭ লাখ ডলার। জুলাই মাসে এসেছিল ২৪৭ কোটি ডলার।
ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড
২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৩০.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের ইতিহাসে এটিই এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই প্রবৃদ্ধি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে বড় অবদান রাখবে।