৮ম শ্রেণির হিন্দুধর্ম মূল্যায়ন প্রশ্ন ও উত্তর ২০২৪

ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন – ২০২৪

বিষয়: হিন্দু ধর্ম শিক্ষা; অষ্টম শ্রেণি

শিক্ষার্থীর জন্য নির্দেশনা

শিক্ষার্থীর নাম:

বিদ্যালয়ের নাম:

ক্রমিক/ পরিচিতি নম্বর:

গীতার আলোকে জন্মদিন পালন

ধরে নাও, আজ তোমার জন্মদিন। তোমার অনেকদিনের শখ একটা দামি জামা কিনবে। কিন্তু দোকান গিয়ে তুমি দামি জামা কিনতে রাজি হলে না। তুমি বললে, আমাকে বরং কম দামের একটা জামা কিনে দাও। তোমার বাবা-মা তোমার কথায় অবাক হলেন। তারা জানতে চাইলেন, তুমি কেন এরকম বলছ? তুমি বললে, আমার তো অনেক জামা আছে। প্রতিবছর আমার জন্মাদনও পালিত হয়। কিন্তু আমার বন্ধুর জন্মদিন কখনও পালিত হয় না। আগামীকাল ওর জন্মদিন। কম খরচে একটা জামা কেনার পর বাকি যে টাকা থাকবে সেটা দিয়ে আমি ওর জন্য একটা জন্মদিনের উপহার কিনতে চাই। আমার অন্য বন্ধুরাও ওর জন্য উপহার আনবে। আমরা স্কুলেই ওর জন্মদিন উদযাপন করে আনন্দ করব। আমাদের ধর্মগ্রন্থেও নিজের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

Table of Contents

কাজ ১: গীতার আলোকে মতামত দিই (একক কাজ)

গীতা থেকে পাওয়া শিক্ষার আলোকে ভেবে বলতো, তুমি কেন তোমার বন্ধু জন্মদিন উদযাপন করতে চাও? তোমার মতামত বুঝিয়ে বলো।

উত্তর ১ঃ

গীতায় (ভগবদ গীতা) উল্লেখিত অনেক শিক্ষার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হল নিঃস্বার্থ সেবা ও পরার্থপরতা। গীতার ৩.১৯ শ্লোকে বলা হয়েছে:

“কর্ম কেবল ইহজগতের জন্য নয়, পরলোকের জন্যও হওয়া উচিত।”*

এই শিক্ষা থেকে বোঝা যায় যে, আমাদের কর্মে পরার্থপরতার গুরুত্ব আছে। জন্মদিন উদযাপনের সময়, আমার বন্ধুর জন্য কিছু করা মানে আমি আমার আনন্দ ও সাফলা অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি। এতে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয় এবং সবার মাঝে সুখ ও আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।

কাজ ২: ধর্মগ্রন্থের নির্দেশনা মেনে চলি (দলগত কাজ)

গীতার নির্দেশনা অনুসরণ করে তুমি নিজের বন্ধু বা চেনাজানা কারোর জন্মদিনে কী ধরণের উদ্যোগ নিতে চাও এবং কেন এই উদ্যোগ নিতে চাও তা দলীয় আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরো

উত্তর ২ঃ

গীতার শিক্ষানুসারে, জন্মদিন উদযাপনে নিজের বন্ধুকে খুশি করতে পারা একটি মহৎ কাজ। দলীয় আলোচনায় আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে, আমরা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে কারোর জন্মদিন উদযাপন করার সময় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করতে পারি। যেমন:

– বন্ধুর জন্য বিশেষ উপহার কিনে দেওয়া

– বন্ধুর জন্মদিনে স্কুলে বা কোনও সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নেওয়া

– দরিদ্র বা অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করা

কাজ ৩: নৈতিকভাবে দৃঢ় হই (একক কাজ)

এই গল্পে আমরা মানুষের মধ্যকার কোন কোন নৈতিক গুণাবলি দেখতে পাচ্ছি? হিন্দুধর্মের মৌলিক বিষয় থেকে এরকম কয়েকটি নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ঘটনা তোমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে গল্পের মতন করে লেখো।

উত্তর ৩ঃ

এই গল্পে আমরা নিচের নৈতিক গুণাবলি দেখতে পাচ্ছি:

1. পরার্থপরতা: নিজের আনন্দ ও সাফল্য অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।

লিফলেট তৈরি:

জন্মদিন উদযাপন: জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ

জন্মদিন উদযাপন সাধারণত পায়েস খেয়ে, কেক কেটে, নিমন্ত্রিতদের আপ্যায়নের মাধ্যমে করা হয়। কিন্তু, আমরা আমাদের জন্মদিনকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে পারি জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে।

আমরা জন্মদিন উপলক্ষে নিচের কাজগুলো করতে পারি:

  • গরীব ও অসহায় শিশুদের খাবার বিতরণ
  • বৃক্ষরোপণ
  • স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন
  • রক্তদান কর্মসূচি
  • বৃদ্ধাশ্রম বা অনাথ আশ্রমে গিয়ে সেবা প্রদান

আমরা যদি এই কাজগুলো করি, তাহলে আমাদের জন্মদিন হবে আরও অর্থবহ ও স্মরণীয়।

1. ধর্মীয় ভিত্তি: ভগবদ গীতার শিক্ষানুসারে, আমাদের উচিত নিজের সুখ অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। এতে পরার্থপরতা ও মানবিকতা বৃদ্ধি পায়। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের জন্মদিনকে আরও বিশেষ করে তুলি জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে।

2. সহানুভূতি: বন্ধুর আনন্দকে নিজের আনন্দ মনে করা।

3. নম্রতা: নিজের চাওয়া থেকে সরে এসে অন্যের জন্য কিছু করতে চাওয়া।

একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা:

আমি একবার একটি ছোট্ট শিশুকে দেখেছিলাম যার কোনও পেন্সিল ছিল না। আমি আমার পেন্সিল তাকে দিয়ে দিয়েছিলাম, এতে সে খুব খুশি হয়েছিল। আমি মনে করি, গীতার শিক্ষানুসারে আমাদের সবারই উচিত নিজেদের সম্পদ অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করা এবং সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করা।

কাজ ৪: ধর্মীয় বিধিবিধান সম্পর্কে জানি (দলগত কাজ)

জন্মদিন একটি সামাজিক উৎসবের উপলক্ষ্য। এরকম দিনে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা কিছু ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে। হিন্দুধর্মে এরকম অনেক সামাজিক এবং ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠান আছে। এ বিষয়ে তোমরা জোড়ায়। দলে আলোচনা করো। তারপর এককভাবে এরকম উৎসব-অনুষ্ঠানের রীতিনীতির একটি ছক তৈরি করে পূরণ করো।

নমুনা ছক

উৎসব-অনুষ্ঠানের নামউৎসব-অনুষ্ঠানের রীতিনীতি
১.
২.
৩.
…..
১.
২.
৩.
……

উত্তর ৪ঃ

দলে আলোচনা করে কিছু সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানের রীতিনীতি তালিকা:

উৎসব-অনুষ্ঠানের নামউৎসব-অনুষ্ঠানের রীতিনীতি
১. পায়েস খাওয়া, কেক কাটা।
২. নিমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন।
৩. দীপাবলি
১. প্রদীপ জ্বালানো।
২. মিষ্টি বিতরণ
৩. আতশবাজি ফোটানো
৪. রাখী বন্ধন১. রাখী বাঁধা
২. মিষ্টি খাওয়া
৩. উপহার দেওয়া

কাজ ৫: লিফলেট তৈরি করি (দলগত এবং একক কাজ)

আমরা সাধারণত পায়েস খেয়ে, কেক কেটে, নিমন্ত্রিতদের আপ্যায়নের মাধ্যমে জন্মদিন উদযাপন করি। তবে তোমরা তোমাদের বন্ধুর জন্মদিনটি জনকল্যাণমুক কাজের মাধ্যমেও স্মরণীয় করে রাখতে পারো। তোমাদের বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কী কী জনকল্যাণমূলক কাজের উদ্যোগ নেওয়া যায় সে সম্পর্কে বন্ধুদের সঙ্গে মতবিনিময় করো। তারপর হিন্দুধর্মের মৌলিক জ্ঞান ও বিধিবিধানের আলোকে জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে জন্মদিন পালনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রত্যেকে একটি করে সচেতনতামূলক লিফলেট তৈরি করো।

আরো লিখতেছি……. অপেক্ষা করুন….

Post Share Now

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *