দেশের কারিগরি শিক্ষার্থীরা আজ রাগে ফুঁসছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই শীর্ষ নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের পর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের দাবি – হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন, নতুবা পরিণতি ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’ নামক সংগঠন থেকে এক বিবৃতিতে এই কঠোর অবস্থান জানানো হয়েছে।
বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’-এর পক্ষে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন এনসিপির দুই নেতা। কিন্তু তাদের এই বক্তব্য কারিগরি শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইসি রোডম্যাপে প্রকাশ করেছে, সংসদ নির্বাচন কবে?
সারজিস আলম তার বক্তব্যে ‘কোটা’ শব্দটি ব্যবহার করেন, আর হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’-এর দাবিকে ‘ন্যায়সংগত’ বলে মন্তব্য করেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক সাব্বির আহমেদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে দুই নেতার বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, “আমরা এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, উপসহকারী প্রকৌশলী দশম গ্রেডের পদ কোনো ‘কোটা’ নয়। এটি একটি বিশেষায়িত পদ। এই পদে নিয়োগের জন্য একমাত্র যোগ্যতা হলো ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি।
তারা উল্লেখ করেছেন, ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ এবং ১৯৯৪ সালের প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞাপনেও এই বিষয়টি স্পষ্ট করা আছে।
কঠোর আলটিমেটাম
‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’ তাদের বিবৃতিতে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে কঠোর আলটিমেটাম দিয়েছে। তারা বলেছেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থী ও টিএসসি শিক্ষার্থী এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীসহ তাদের পরিবার সম্পূর্ণরূপে এনসিপিকে বর্জন করবে।”
রাজনৈতিক প্রভাব
এই ঘটনা এনসিপির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারে। দেশের কারিগরি শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদের সমর্থন হারানো যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই ক্ষতিকর।
এই মুহূর্তে সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের প্রতিক্রিয়ার দিকে। তারা কি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন, নাকি পরিস্থিতি আরো জটিল হবে – সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই প্রতিবেদনটি সংবাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এখানে ব্যবহৃত সমস্ত তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো বক্তব্যে ভুল থাকলে তার জন্য আমরা দুঃখিত।