গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এবার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। লক্ষ্য-হামাসকে নিরস্ত্র করা। আর এ নিয়েই বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক বিস্ফোরক দাবি: “আমি হামাসের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা নিরস্ত্র হবে।
‘আমি বলেছি, তোমরা নিরস্ত্র হবে, তাই তো?’
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন,
অনেকে বলে, ‘ওরা নিরস্ত্র হবে না।’ আমি বলি, ওরা নিরস্ত্র হবে। আমি হামাসের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি বলেছি, ‘তোমরা নিরস্ত্র হবে, তাই তো?’ তারা বলেছে, ‘জি স্যার, আমরা নিরস্ত্র হব।’ ওরা নিরস্ত্র হবে, নতুবা আমরা ওদের নিরস্ত্র করব-বুঝেছ?
ট্রাম্পের এই বক্তব্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পলিটিকো জানিয়েছে, এটি গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার দ্বিতীয় ধাপের অংশ-যেখানে মূল লক্ষ্য হামাসের অস্ত্র সমর্পণ নিশ্চিত করা।
গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠাতে আগ্রহী কয়েক দেশ
পলিটিকোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বাহিনীতে সৈন্য পাঠাতে সম্ভাব্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়া।
একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ও সাবেক এক কর্মকর্তা পলিটিকোকে জানিয়েছেন-এই তিন দেশকে ‘শীর্ষ প্রার্থী’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ সম্মতি জানায়নি।
এর আগে ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, ইন্দোনেশিয়া ও আজারবাইজানের পাশাপাশি মিশর, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)–ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অংশ নিতে পারে।
জাতিসংঘ ছাড়াই ট্রাম্পের পরিকল্পনা
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, ইন্দোনেশিয়া এখন পর্যন্ত একমাত্র দেশ যারা প্রকাশ্যে সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। দেশটি জানিয়েছে, জাতিসংঘের অনুমোদনে শান্তিরক্ষী মিশনের আওতায় তারা ২০ হাজার সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।
আরো পড়ুন : অনাহারে শিশুদের মৃত্যু বাড়ছে গাজায়, নতুন তথ্য জানাল ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় জাতিসংঘের কোনো ভূমিকা বা অনুমোদনের উল্লেখ নেই। বরং পলিটিকোর তথ্য অনুযায়ী, কাতার, ইউএই ও মিশরের সেনারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করবে, যাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন ধাপের ইঙ্গিত
ট্রাম্পের এই বক্তব্য এবং গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনা-দুই-ই ইঙ্গিত দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক ভূরাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনার।
এখন প্রশ্ন একটাই-হামাস কি সত্যিই নিরস্ত্র হতে রাজি হয়েছে, নাকি এটি ট্রাম্পের কূটনৈতিক চাপের কৌশল?