Thursday, August 28, 2025
Homeস্বর্ণের দামে আসছে পরিবর্তন: সুখবর নাকি চিন্তার কারণ?

স্বর্ণের দামে আসছে পরিবর্তন: সুখবর নাকি চিন্তার কারণ?

দুবাইসহ আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস মিলছে। টানা কয়েক মাসের ঊর্ধ্বমুখী ধারা ভেঙে এবার দামে স্বস্তি আসতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। চলতি আগস্ট মাস থেকেই এই পরিবর্তনের প্রভাব দেখা দিতে পারে।

স্বর্ণ শুধু গহনা নয়, বরং মানুষের আস্থা ও নিরাপত্তার প্রতীক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি পরিবারে সঞ্চয়ের নিরাপদ ভরসা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামের উত্থান–পতন দেখা যাচ্ছে, তা সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারীদের মাঝেও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

স্বস্তির ইঙ্গিত: দীর্ঘদিনের ঊর্ধ্বমুখী দাম এবার নিম্নমুখী?

দুবাইসহ বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর এবার স্বর্ণের দামে পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চলতি আগস্ট মাস থেকেই এই পরিবর্তনের প্রভাব দেখা দিতে পারে।

এফএক্সপ্রোর প্রধান বাজার বিশ্লেষক অ্যালেক্স কুপ্টসিকেভিচ জানান, গত পাঁচ মাস ধরে স্বর্ণবাজারে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত ক্রয়ের চাপ এখন উল্টো প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। তার মতে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলারের নিচে, এমনকি ২ হাজার ২০০ ডলার পর্যন্ত নেমে আসতে পারে। তবে বাজারে যদি আবার চরম বুলিশ ধারা দেখা দেয়, তাহলে দাম বেড়ে ৪ হাজার ৬০০ ডলার পর্যন্ত ছুঁতে পারে।

দুবাই বাজারে দামের ওঠানামা

সোমবার দুবাই জুয়েলারি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল প্রতি গ্রাম ৪০৫.৫ দিরহাম, যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম। একই দিনে ২২ ক্যারেট স্বর্ণ লেনদেন হয় ৩৭৫.৫ দিরহামে, ২১ ক্যারেট ৩৬০.২৫ দিরহামে এবং ১৮ ক্যারেট ৩০৮.৭৫ দিরহামে।

আরো পড়ুন:

আজকের সোনার দাম বাংলাদেশ ২৫ আগস্ট ২০২৫ – ২২, ২১, ১৮ ক্যারেট সোনার রতি, আনা, ভরি ও গ্রামের দাম

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দামও সামান্য কমেছে। সোমবার এক আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ৩,৩৬৪.৭৬ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ০.২৩ শতাংশ হ্রাস।

কেন কমছে স্বর্ণের দাম?

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) আগামী সেপ্টেম্বরে মুদ্রানীতিতে শিথিলতা আনতে পারে। তবে যদি তারা আবারও কড়াকড়ি নীতি গ্রহণ করে, তাহলে ডলারে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়বে। এ কারণে স্বর্ণের প্রতি চাহিদা কমে গিয়ে দামের নিম্নমুখী চাপ তৈরি হতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই স্বর্ণের প্রতি চাহিদা বিশ্বব্যাপী বেড়ে যায়। মাত্র দুই বছরের মধ্যে স্বর্ণের দাম ১.৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালের এপ্রিলে রেকর্ড ৩,৫০০ ডলার ছুঁয়েছিল। তবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কেনা কমিয়েছে এবং স্বর্ণ-ভিত্তিক ইটিএফে বিনিয়োগও হ্রাস পেয়েছে। ফলে দামের গতি ধীর হয়ে পড়ছে।

সবই অবশ্য নেতিবাচক নয়। ডলার দুর্বল হলে, মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের রিটার্ন কমলে, অথবা ফেড যদি প্রণোদনামূলক নীতি নেয়—তাহলে আবারও স্বর্ণের বাজার চাঙ্গা হতে পারে।

স্বর্ণের দামের এই সম্ভাব্য পরিবর্তন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আমদানিকারক এবং বিনিয়োগকারীদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যেসব দেশে স্বর্ণ আমদানি বৈদেশিক মুদ্রার ওপর নির্ভরশীল, সেখানে দামের ওঠানামা অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে।

ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনটি বিভিন্ন অনলাইন সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে প্রকাশিত তথ্য শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে প্রদান করা হলো, বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Ratan Datta
Ratan Datta
আমি রতন দত্ত "স্টার শান্ত" ওয়েবসাইটে ম্যানেজিং ও এডিটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছি। আমি খেলাধুলা, অটোমোবাইল, বিনোদন ও বিভিন্ন বিষয় লেখালেখি করি এবং আমার লক্ষ্য আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সহজে বোঝানো।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ নিউজ