সোনার দাম শিগগিরই কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কামাখ্যা জুয়েলসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মনোজ ঝা। তাঁর মতে, বর্তমানে সোনা “বাবল জোনে” পৌঁছেছে এবং আগামী মাসগুলোতে মুনাফা তুলতে গিয়ে দাম কিছুটা কমে আসতে পারে।
সোনার বাজারে অস্থিরতা: এমসিএক্সে রেকর্ড দর
ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (MCX) ডিসেম্বর ডেলিভারির সোনার ফিউচার মূল্য ২০ অক্টোবর ২.১২% বেড়ে ১,২৯,৭০০ রুপি হয়েছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার স্পট মূল্য ০.১% বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪,২৫৩.৩৩ ডলার এবং মার্কিন ডিসেম্বর গোল্ড ফিউচার ১.৩% বেড়ে ৪,২৬৬.৩০ ডলার প্রতি আউন্সে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (Federal Reserve) সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা—এই দুই কারণেই বিনিয়োগকারীরা সোনাকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
“সোনা এখন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে”—মনোজ ঝা
মনোজ ঝা বলেন, “সোনা এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীরাও কিছুটা উদ্বিগ্ন। অতীতে ১৯৭৯–৮০ ও ২০১০–১১ সালে সোনার দামে তীব্র উত্থান দেখা গিয়েছিল, কিন্তু সেই উচ্চতা থেকে বড় পতনও এসেছিল।”
আরো পড়ুন: আজকের সোনার দাম – ২১ অক্টোবর ২০২৫
তাঁর মতে, সাম্প্রতিক উত্থানের ফলে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে সোনার অনুপাত অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। “সাধারণত মানুষ তাদের পোর্টফোলিওর ১০–১২% সোনায় রাখে, কিন্তু এখন তা বেড়ে ১৮–২২% হয়েছে,” জানান ঝা। “এই অবস্থায় অনেকে মুনাফা তুলতে চাইবেন, কারণ সোনা বর্তমানে ওভারবট জোনে রয়েছে।”
৩০০–৪০০ ডলার পর্যন্ত কমতে পারে সোনার দাম
মনোজ ঝার ধারণা, শিগগিরই প্রতি আউন্স সোনার দামে ৩০০–৪০০ ডলার পর্যন্ত পতন আসতে পারে। তবে এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
তিনি বলেন, “দামের স্থিতিশীলতার পর দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা আবারও বাজারে প্রবেশ করতে পারেন।”
স্বল্পমেয়াদে কিছুটা মন্দা দেখা দিলেও, তিনি ভারতের উৎসব মৌসুমে সোনার চাহিদা ও দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী।
উৎসবের মৌসুমে আশার ইঙ্গিত
মনোজ ঝার তথ্য অনুযায়ী, এবারের ধনতেরাসে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো জুয়েলারির বিক্রি হয়েছে। রেকর্ড মূল্যের মধ্যেও বিক্রি মাত্র ১৫–২০% কমেছে, যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। বার্ষিক ভিত্তিতে সারাফা বিক্রি ২৫% এর বেশি বেড়েছে।
তাঁর মতে, “নিকট ভবিষ্যতে দাম কমা বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আরও বাড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদে সোনা পুনরায় আকর্ষণীয় সম্পদে পরিণত হবে।”