হঠাৎ করেই বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় ধস নেমেছে। বুধবার মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ (MCX)-এ ডিসেম্বর মেয়াদি স্বর্ণের দাম একদিনে ৬ শতাংশ কমে যায়, যা ১০ অক্টোবর ২০২৫-এর পর সর্বনিম্ন স্তর। আন্তর্জাতিক বাজারেও দুই দিনের ব্যবধানে সোনার দামে প্রায় ৮ শতাংশ পতন রেকর্ড হয়েছে।
দুই দিনে ৮% কমেছে স্পট মার্কেটে সোনার দাম
বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ শতাংশেরও বেশি কমে ৪,০০৭ ডলারের নিচে নেমে আসে। গত দুই দিনে হঠাৎ এই ৮ শতাংশ পতন ১৩ অক্টোবরের পর সবচেয়ে বড় ধস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মঙ্গলবার একদিনেই সোনার দাম ৫ শতাংশের বেশি কমেছিল, যা গত ১২ বছরে একদিনে সবচেয়ে বড় পতন।
এমসিএক্সে বড় ধস, নেমে এলো রেকর্ড নিম্ন স্তরে
দেশীয় ফিউচার মার্কেট এমসিএক্সে বুধবার সন্ধ্যায় সোনার ডিসেম্বর কন্ট্রাক্ট ১,২৪,৪২৩ টাকা প্রতি ১০ গ্রাম দরে লেনদেন শুরু হয়, কিন্তু দ্রুতই দাম নেমে আসে ১,২০,৫৭৫ টাকায়। এটি গত ১০ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন স্তর। আগের সেশনের তুলনায় একদিনে দামের পতন ৬ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ: প্রফিট বুকিং প্রধান কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে সোনার দামে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর বিনিয়োগকারীরা লাভ তুলে নেওয়ার (profit booking) পথে হাঁটায় এই ধস দেখা দিয়েছে। এমসিএক্সে একপর্যায়ে সোনার দাম প্রায় ৭২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। ফলে বাজারে সংশোধন অনিবার্য ছিল।
আরো পড়ুন: আরবিআইয়ের সোনার ভান্ডার নতুন উচ্চতায়, মজুত ছাড়াল ৮৮০ টন
আন্তর্জাতিক প্রভাব: যুক্তরাষ্ট্র–চীন উত্তেজনা কমায় বিনিয়োগ ঝোঁক বদল
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমে আসায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। এর ফলে স্বর্ণের চাহিদা কমে গেছে। বুধবারের পতনটি গত পাঁচ বছরে একদিনে সর্বাধিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ ১,৩২,২৯৪ টাকা থেকে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে কমে এসেছে প্রায় ১২,০০০ টাকা।
ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে আগামী সপ্তাহগুলোতে সোনার দামে আরও ওঠানামা দেখা যেতে পারে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি সতর্ক থাকার সময়, কারণ প্রফিট বুকিং ও বাজারের মনোভাব দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে।