২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী করুণভাবে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা অবস্থায় বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। কিন্তু সেই ঘটনার পরও সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ হয়নি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০৭ বাংলাদেশি। শুধু চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই নিহত হয়েছেন ২২ জন। এমনকি গত বছরও বিজিবি সদস্য রইসুদ্দিনকে ‘ভুলবশত’ গুলি চালিয়ে হত্যা করে বিএসএফ, যা নিয়ে দায়সারা ব্যাখ্যা দিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী।
সীমান্ত হত্যা থামাতে ব্যর্থ যৌথ বৈঠক
২০২৪ সালে দুই দেশের যৌথ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক সমাধান, জনমত সৃষ্টি এবং ভারতের ওপর কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রাখাই এখন জরুরি।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলন: প্রত্যাবাসন ইস্যুতে নতুন সমাধানের খোঁজ
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সীমান্তে যারা নিহত হয়েছেন তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। সুতরাং এটি স্পষ্টতই বিচারবহির্ভূত হত্যা। তারা প্রস্তাব করেছেন, এই বিষয়টি তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা দরকার।
আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ
বিশ্লেষক ও আইনজীবীদের মতে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে বারবার আলোচনার কথা বলা হলেও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। চীনসহ ভারতের অন্য সীমান্তবর্তী দেশে এমন হত্যার ঘটনা ঘটছে না। বাংলাদেশ তাই প্রয়োজনে বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালত ও বৈশ্বিক ফোরামে তুলতে পারে বলে মত দিয়েছেন তারা।
ঢাকায় বিজিবি–বিএসএফের আসন্ন যৌথ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ইস্যুটি গুরুত্বসহকারে আলোচনায় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এখনই সময় কূটনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থান নেওয়ার।