Wednesday, October 15, 2025
Homeসিটিসেল ফিরছে আবার : ২৫ পয়সা কলরেট ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট — সত্য...

সিটিসেল ফিরছে আবার : ২৫ পয়সা কলরেট ও নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট — সত্য নাকি গুজব?

আপনি যদি ভোরের চা-কাপে স্মৃতিপটে হারিয়ে যাওয়া সেই নামটা খুঁজে থাকেন—সিটিসেল—তাহলে সাম্প্রতিক এক ফেসবুক পোস্টে যে খবর উঠেছে তা হয়তো আপনার কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ভাষায় বললে, এই খবরটা শুনে অনেকেই উল্লসিত হচ্ছেন, আবার অনেকে সন্দেহে ভোগছেন। নিচে সেই পোস্ট এবং মন্তব্যগুলো থেকে উত্থিত বিষয়গুলো সরল ও মানবীয় ভাষায় ব্যাখ্যা করে দিলাম, যাতে আপনি নিজেই বুঝতে পারেন ব্যাপারটা কতটা বাস্তবসম্মত।

পোস্টে কী বলা হলো

Tanzimul Islam নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করা পোস্টে বলা হয়েছে—সিটিসেল আবার বাজারে ফিরছে, এবার নিয়ে আসছে ২৫ পয়সা কলরেট এবং মেয়াদবিহীন (অবসোলিউট) ইন্টারনেট প্যাকেজ। লিখেছেন যে সিটিসেলের মাতৃপ্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক টেলিকম তাদের নয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী শুধু কম কলরেটই নয়, দেশজুড়ে টাওয়ার বাড়িয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিতে চাইছে। পোস্টটিতে আরও বলা ছিল—এবার সিটিসেল GSM প্রযুক্তি আনছে, ফলে তাদের সিম যেকোনো ফোনেই ব্যবহার করা যাবে, যা গ্রাহকদের জন্য সুবিধা হবে।

মানুষ কী বলছে — মন্তব্যের প্রতিফলন

পোস্টের কমেন্ট সেকশনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়—কেউ আনন্দ প্রকাশ করেছেন, কেউ কটাক্ষ ও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্তব্যের সারমর্ম এখানে তুলে ধরা হলো (যেগুলো প্রকাশ্যে পোস্ট করা হয়েছে) —

  • CM MoYnuL IsLaM নামের একজন লিখেছেন সময় ও বাস্তবতার দিক থেকে সন্দেহ তৈরি হয়েছে; তিনি টিকটিক করে বলেছেন সরকারি নীতিমালা ও আগের আর্থিক তথ্য বিবেচনা করলে ২৫ পয়সা কলরেটের কথা সহজভাবে বিশ্বাস করা যায় না।
  • Md Badsha Mollick মন্তব্য করেছেন যে গুজব ছড়ানো বন্ধ করা উচিত; সরকারের ট্যাক্স/ফিস ইত্যাদি বিবেচনায় ২৫ পয়সা কিভাবে সম্ভব তা প্রশ্নবোধক, তবু তিনি ব্যক্তিগতভাবে সিটিসেলকে ফিরে দেখতে চান।
  • আরও কিছু ব্যবহারকারী নস্টালজিকভাবে অতীতের সিটিসেল নম্বর কিংবা সেই স্মৃতি শেয়ার করেছেন, আবার কারও কারও কথায় দেখা যায় বাজারে ফিরলে তারা আগ্রহী হবেন।
  • অনেকে হাসি-মজার কথাও লিখেছেন, কেউ কেউ প্রযুক্তিগত দিক থেকে GSM আনা হলে সুবিধা হবে বলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এই সব মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়—মানুষের মধ্যে মিশ্র অনুভূতি আছে: আশায় মিশে আছে সন্দেহও।

আরো পড়ুন: ঠোঁটের যত্নে সেরা ৫টি লিপ বাম ২০২৫

বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ

এখন একটু বাস্তব দিক থেকে দেখা যাক — ২৫ পয়সা কলরেট এবং মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট কতটা সম্ভব হতে পারে? এখানে কয়েকটি সাধারণ কারণে সন্দেহ জন্মায় (এগুলো সরাসরি উৎস যাচাই করা ছাড়া সাধারণ বুদ্ধি ও টেলিকম খাতের সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা):

  • টেলিকম সেক্টরে কলের রেট শুধু অপারেটরের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না—সরকারি ট্যাক্স, ইন্টারকনেকশন চার্জ, লাইসেন্স ফি, অবকাঠামো খরচ ইত্যাদি আছে। এগুলো মিলিয়ে চূড়ান্ত কলরেট নির্ধারণ করা হয়।
  • মেয়াদবিহীন (অসীম) ইন্টারনেট প্যাকেজ দিলে নেটওয়ার্কে লোড বাড়বে; যদি সিমিত তহবিল থেকে পর্যাপ্ত টাওয়ার ও ব্যাকহল সমর্থন না থাকে, সেবার গুণগত মান বজায় রাখা কঠিন হতে পারে।
  • GSM প্রযুক্তি আনলে গ্রাহকের সুবিধা নিশ্চিত হবে—কারণ অধিকাংশ ফোনেই GSM সাপোর্ট থাকে—তবে প্রযুক্তি বদলই ব্যবসায়িক সাফল্য নিশ্চিত করে না; সার্ভিস ডেলিভারির মান, টাওয়ার নেটওয়ার্ক এবং কাস্টমার সাপোর্টও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
  • অতীতের আর্থিক হিসাব, ঋণ বা শেয়ারহোল্ডিং পরিস্থিতি থাকলে নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধা থাকতে পারে—এগুলো কোম্পানির ভেতরের আর্থিক বিষয়, যা প্রকাশ্যভাবে নিশ্চিত না হলে বলা কঠিন।

সব মিলিয়ে বলা যায়—দাম কম রাখা সম্ভব, কিন্তু সেটা স্থায়ী ও নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে; বেশিরভাগ সময় নানা রকম শর্ত, সরকারি ফি ও অবকাঠামো বিনিয়োগ বিবেচ্য হয়।

মানুষজনের আশা ও স্মৃতি—এটাই সবচেয়ে মানবিক অংশ

কমেন্টগুলোতে সবচেয়ে স্পষ্ট যে জিনিসটি চোখে পড়ে—মানুষের মধ্যে একটি নস্টালজিয়া ও আশা আছে। কেউ বলছেন গ্রামীণফোন-রবি-অর অন্যদের মাঝে সিটিসেল ফিরে এলে আমি ওরা ব্যবহার করব; কেউ বলছেন আগে GSM থাকলে হয়তো সিটিসেল টিকে যেত—এইসব মন্তব্য শুধু লজিস্টিক বা আর্থিক নয়, মানুষের স্মৃতি ও অনুভূতির কথাও বলে। এমন আশা-চিত্তকে অস্বীকার করা যায় না—কারণ টেলিকম সেবা কেবল ব্যাবসা নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ।

শেষ কথা:

আপনি যদি সিটিসেলকে আবার বাজারে দেখতে চান, সেই ইচ্ছেটা পুরোপুরি স্বাভাবিক। তবে খবরটি যাচাই না হওয়া পর্যন্ত খুব বেশি আশাবাদী বা বিজয়ের মতো উদ্‌যাপন করা ঠিক না—প্রতিটি বড় ঘোষণার পিছনে কাগজপত্র, লাইসেন্স, আর্থিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন থাকে। যতদিন কোম্পানির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বা সরকারের অনুমোদন প্রকাশ হয় না, ততদিন এটিকে একটি সম্ভাব্য খবর বা সোশ্যাল মিডিয়া হিপ বলা ভালো।

Ratan Datta
Ratan Datta
আমি রতন দত্ত "স্টার শান্ত" ওয়েবসাইটে ম্যানেজিং ও এডিটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছি। আমি খেলাধুলা, অটোমোবাইল, বিনোদন ও বিভিন্ন বিষয় লেখালেখি করি এবং আমার লক্ষ্য আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সহজে বোঝানো।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ নিউজ