সৌরজগতের এক রহস্যময় বস্তু ৩আই/অ্যাটলাস বিজ্ঞানীদের কৌতূহল বাড়াচ্ছে। হার্ভার্ডের গবেষক আভি লোয়েব বলছেন, এটি সূর্যের আলো প্রতিফলিত না করে নিজস্ব আলো তৈরি করছে, যেন কোনো মহাকাশযানের হেডলাইট জ্বলে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি ধূমকেতু নয়, বরং শক্তিশালী কোনো উৎস দ্বারা আলোকিত একটি আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু।
গত ২১ জুলাই হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গবেষকরা ৩আই/অ্যাটলাস-এর ছবি তোলেন। ছবিতে দেখা যায়, সূর্যের দিকে মুখ করা বস্তুটির এক পাশে আলোকিত অঞ্চল রয়েছে। এই আলো কোনো লেজার বা স্পটলাইটের মতো নয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আভি লোয়েব মনে করেন, বস্তুটি নিজস্ব আলো তৈরি করছে, যা সাধারণ ধূমকেতুর মতো সূর্যের আলো প্রতিফলিত করছে না। এটি সৌরজগতের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
লক্ষ্য করা গেছে, বস্তুটির পৃষ্ঠ থেকে সূর্যের উত্তাপে ধুলা বের হচ্ছে। তবে দূরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর উজ্জ্বলতা দ্রুত কমছে। ধূমকেতুর মতো উজ্জ্বলতা স্থিতিশীল নয়, যা বস্তুটির প্রকৃতি আরও রহস্যময় করে তুলছে। প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা ভাবেছিলেন, বস্তুটি ১২ মাইল লম্বা ধূমকেতু। কিন্তু আলো কমার ধরণ এবং উজ্জ্বলতার বৈচিত্র্য দেখিয়ে দিয়েছে, এটি ধূমকেতুর আচরণের সঙ্গে মেলে না।
লোয়েব ও সহকর্মী এরিক কেটোর মতে, যদি এটি নিজের আলো তৈরি করে, তবে আকার ১২ মাইল নয়, বরং প্রায় ৩০০ ফুট হতে পারে। অর্থাৎ আকারে ছোট হলেও শক্তির উৎস অত্যন্ত শক্তিশালী।
গবেষকরা বলছেন, বস্তুটি কৃত্রিম হতে পারে। পারমাণবিক শক্তিচালিত কোনো মহাকাশযানও এই ধরনের আলো উত্পন্ন করতে সক্ষম। পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে থাকা বস্তুটি এত আলো তৈরি করছে।
আরো পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার সরকারি হ্যাকারকে উন্মোচন: কেন এই ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নিলেন দুই হ্যাকার
বস্তুটি আগামী ১৭ ডিসেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি যাবে। এর আগে এর উজ্জ্বলতা ও প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে না। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, তখনই প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হবে। ৩আই/অ্যাটলাস নিয়ে গবেষণা বিজ্ঞানীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে। এর উজ্জ্বলতা, উৎস ও প্রকৃতি সম্পর্কে নতুন তথ্য আসার অপেক্ষায় পুরো বিশ্বের মহাকাশবিদরা কৌতূহল নিয়ে নজর রাখছেন।