ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সেই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল তেহরান নাকি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। ইরান বলছে, এসব দাবি ‘মনগড়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রতিনিধি মাইকেল ওয়াল্টজের উত্থাপিত বক্তব্যের জবাবে ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন,
ইরানের পররাষ্ট্রনীতি জাতিসংঘ সনদ ও পারস্পরিক সার্বভৌমত্বের নীতির ওপর ভিত্তি করে গঠিত। আমরা কখনো কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না।
অস্থিতিশীলতার আসল উৎস যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি’
ইরাভানি বলেন, পশ্চিম এশিয়ায় দীর্ঘদিনের অস্থিতিশীলতার মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ‘অবৈধ সামরিক উপস্থিতি ও ধ্বংসাত্মক ভূমিকা’। তিনি দাবি করেন, “ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা অঞ্চলে সংঘাত উসকে দিচ্ছে, আর ইরানকে দোষারোপ করে প্রকৃত ইস্যু থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করছে।”
তিনি যুক্ত করেন, ‘ইরানের প্রক্সি’ কথাটি একধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা, যার মাধ্যমে ইসরাইলের আগ্রাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় ঢাকতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
‘ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগী’
ইরানি রাষ্ট্রদূতের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বারবার ইসরাইলকে রক্ষা করেছে, ফলে ওয়াশিংটন নৈতিক ও আইনগতভাবে গাজার গণহত্যার দায় এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, “ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর বিমান হামলায় গাজার হাসপাতাল, স্কুলসহ অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
ইরাভানি জানান, ইসরাইল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং অবৈধ অবরোধ আরোপ করে মানবিক সহায়তা বাধাগ্রস্ত করছে যা আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী।
জাতিসংঘ ও আইসিজের প্রতি ইরানের আহ্বান
ইরাভানি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (ICJ) সাম্প্রতিক মতামতের উল্লেখ করেন, যেখানে ইসরাইলকে জাতিসংঘ কর্মীদের ওপর হামলা ও মানবিক সহায়তা ঠেকানোর জন্য দায়ী করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ইসরাইল শুধু গাজায় নয়, সিরিয়া ও লেবাননেও আক্রমণ চালাচ্ছে, এমনকি ইরানের অভ্যন্তরেও হামলা করেছে। এই সবই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ হুমকি।
যুদ্ধবিরতি ও ন্যায়বিচারের দাবি
ইরান জানায়, তারা গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে।
ইরাভানি বলেন,
আরো পড়ুন : সিনওয়ারের মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘোষণায় আত্মবিশ্বাস ও বন্দি মুক্তির দাবি
সত্যিকারের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে যুদ্ধাপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন সংকটের একমাত্র সমাধান হলো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যার রাজধানী হবে আল-কুদস আল-শরিফ (জেরুজালেম)।


