মুম্বাই মানেই কর্মচঞ্চলতা আর অক্লান্ত পরিশ্রমের শহর। তবে সেই শহরই আবার ভারী বৃষ্টির দিনে রূপ নেয় দুর্ভোগের নগরীতে। সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রবল বর্ষণ আর আবহাওয়া দপ্তরের ‘রেড অ্যালার্ট’ উপেক্ষা করে হাঁটতে হাঁটতে অফিসে পৌঁছালেন আলফা ক্যাপিটালের সিনিয়র পার্টনার মুকেশ জিন্দাল। ভেজা জুতা, প্যান্ট আর মোজা পরেই তিনি মিটিংয়ে যাওয়ার পথে নিজের ছবি শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
“মুম্বাই থেমে থাকে না” জিন্দালের পোস্ট
লিঙ্কডইনে পোস্টে মুকেশ জিন্দাল লিখেছেন:
“মুম্বাই কখনো থেমে থাকে না। ঝড়-বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা কিংবা যানজট—যে বাধাই আসুক না কেন, ভারতের আর্থিক রাজধানী এগিয়ে যায়। আজও হাঁটু-সমান পানির মধ্য দিয়ে আমি যাচ্ছি মিটিংয়ে, যেমন লাখো মানুষ এই শহরের জীবনধারা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
তিনি আরও যোগ করেন:
“এটাই মুম্বাইয়ের আসল শিক্ষা: স্থিতিস্থাপকতা, নিয়মিততা আর এগিয়ে যাওয়ার মনোবল।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া
তবে জিন্দালের এই পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই তাঁর কর্মস্পৃহাকে প্রশংসা করেছেন, আবার অনেকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন:
“আমাদের সত্যিই এই ‘স্পিরিট অব মুম্বাই’ নামক মুখোশটাকে মহিমান্বিত করা বন্ধ করতে হবে। ছবিটা আসলে দুর্বল অবকাঠামো আর বছরের পর বছর চলা একই সমস্যার প্রতিফলন।”
অন্য এক মন্তব্যে বলা হয়েছে:
“শহরটিকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা উচিত, যাতে সাধারণ মানুষ এভাবে ভোগান্তিতে না পড়ে।”
আরেকজন সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন:
“কী ভয়ংকর উদাহরণ দিচ্ছেন আপনারা! এই অবস্থায় অনুপ্রেরণামূলক পোস্ট না দিয়ে উন্নত ড্রেনেজ সিস্টেম আর নাগরিক জীবনের মানোন্নয়ন দাবি করা উচিত।”
আরো পড়ুন:
‘স্পিরিট অব মুম্বাই’ আবারও আলোচনায়, বৃষ্টিতে রাস্তা হয়ে গেছে নদী
সাংবাদিক ও অন্যান্য প্রতিক্রিয়া
সাংবাদিক প্রিয়াঙ্কা সাম্ভাভ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিখেছেন—
“এমন দিনে আমার সঙ্গে প্রতিশ্রুতি রেখে অনুষ্ঠান করায় ধন্যবাদ.. আপনার ছবিটা দারুণ। প্রতিশ্রুতির প্রতি আপনার এই দায়বদ্ধতা অনুপ্রেরণামূলক।”
অন্যদিকে রেডডিটে একজন মজার ছলে মন্তব্য করেন—
“প্রথম প্রশ্ন, কেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন, কেন ভিজে প্যান্ট-জুতা নষ্ট করছেন? এত দামি পোশাক-জুতা নষ্ট করার কী দরকার ছিল? ক্যাব, অটো, মেট্রো—যে কোনো কিছু ব্যবহার করতে পারতেন।”
আরেকজন খুশি হয়ে লিখেছেন—
“ভালো লাগছে যে আমার অফিসে সিনিয়ররা বলে দিয়েছেন আজ আর অফিস আসতে হবে না, বাসা থেকে কাজ করো। এটাই আসল সমাধান।”
আরেক মন্তব্যে বলা হয়েছে—
“মুম্বাইয়ের কর্পোরেট শ্রমিক ভাইরা, দয়া করে এটা করবেন না। যদি সত্যিই সম্ভব হয়, তাহলে বাসা থেকে কাজ করার চেষ্টা করুন।”
পরিশেষে
মুম্বাইয়ের এই ঘটনাটি আবারও তুলে ধরেছে—একদিকে শহরবাসীর অদম্য মনোবল, অন্যদিকে অপ্রতুল অবকাঠামোর বাস্তব চিত্র। মানুষের কর্মস্পৃহা প্রশংসনীয় হলেও, উন্নত নগর ব্যবস্থাপনার দাবি যেন আরও জোরালো হচ্ছে।
ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে তৈরি। এখানে প্রকাশিত মতামতগুলো ব্যক্তিগত এবং সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গি নয়।
সূত্র: মিন্ট