দীর্ঘ বছর ধরে পিঠের তীব্র ব্যথায় ভুগছিলেন জার্মানির রাফায়ালা বাওর। বিভিন্ন চিকিৎসা ও থেরাপি গ্রহণ করেও তার যন্ত্রণা কমছিল না। ডাক্তাররা একপর্যায়ে জানিয়ে দেন, আর কোনো চিকিৎসা পদ্ধতিই কার্যকর নয়। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান রাফায়ালা।
শেষ পর্যন্ত একটি পরীক্ষামূলক চিকিৎসা তার জীবনে নতুন আশার আলো নিয়ে আসে। মিউনিখে তার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় অত্যাধুনিক ব্যথানিয়ন্ত্রক পেসমেকার। ক্রেডিট কার্ডের চেয়েও ছোট এই যন্ত্রটি পিঠের নিচের দিকে ত্বকের ভেতর স্থাপন করা হয়। এর কাজ হলো স্পাইনাল নার্ভ থেকে মস্তিষ্কে ব্যথার সংকেত পৌঁছানো বন্ধ রাখা।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সংকট: ডাক্তার-নার্স ঘাটতি ও মানহীন শিক্ষা নিয়ে উদ্বেগ
ব্যথা বিশেষজ্ঞ ও সার্জন আন্দ্রেয়া প্রেসার জানান, প্রথমে সাধারণ অ্যানেসথেশিয়ায় স্পাইনাল ক্যানেলে ইলেকট্রোড স্থাপন করা হয়। এরপর স্থানীয় অ্যানেসথেশিয়ায় সিমুলেটর বসানো হয়। পুরো প্রক্রিয়ার সময় রাফায়ালা সচেতন ছিলেন এবং আশা করেছিলেন, এবার হয়তো যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে।
অস্ত্রোপচারের পর রাফায়ালাকে ডিভাইস ব্যবহার শেখানো হয়। এতে সময় ও অনুশীলনের প্রয়োজন হলেও ধীরে ধীরে তিনি ইতিবাচক ফলাফল পেতে শুরু করেন। ছোট যন্ত্রটি তার ব্যথা প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
নিজ অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রাফায়ালা বলেন, “আগে বাগানে কাজ করা, হাঁটা বা কেনাকাটা করাও ছিল অসহ্য কষ্টের। এখন আমি অনেক স্বাভাবিকভাবে এসব করতে পারি। মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয়েছে।”
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। তবে রাফায়ালার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিটি সফল হয়েছে। বহু বছর ধরে তীব্র যন্ত্রণায় ভোগার পর অবশেষে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে আবারও স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে পারছেন।