আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ইসরায়েল। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করার পর বিশ্বকাপসহ বিভিন্ন খেলায় তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার যে কোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। সে কারণে বিষয়টিতে ওয়াশিংটনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, “ইসরায়েলের জাতীয় ফুটবল দলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করার কোনো চেষ্টা যেন সফল না হয়, সে জন্য আমরা অবশ্যই কাজ করব।”
এদিকে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা ইসরায়েলকে সাময়িকভাবে স্থগিত করার বিষয়ে শিগগির বৈঠকে বসতে পারে। নরওয়ে ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লিসে ক্লাভেনেস বলেছেন, “প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণ মেনে নিতে হচ্ছে, তবে গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর আক্রমণ উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়।”
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও খোলাখুলি বলেছেন, রাশিয়ার মতো ইসরায়েলকেও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত। এমনকি স্পেন বিশ্বকাপ বয়কটের কথাও বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন সোশ্যালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপাত্র পাতচি লোপেস।
গ্রিসের ক্লাব পিএওকের সমর্থকেরা ইউরোপা লিগে ইসরায়েলি দল ম্যাকাবি তেল আবিবের বিপক্ষে ম্যাচে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। ‘গণহত্যা বন্ধ করো’ ও ‘ইসরায়েলকে লাল কার্ড দেখাও’ লেখা ব্যানার স্টেডিয়ামে দেখা যায়। হাজারো দর্শক স্লোগান তুলেছেন “ফ্রি প্যালেস্টাইন।
২০২২ সালে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ইউক্রেন আক্রমণের কারণে। এখন প্রশ্ন উঠছে, একই মানদণ্ড কি ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে? মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ফিফা ও উয়েফাকে আহ্বান জানিয়েছেন গণহত্যার অভিযোগ থাকা অবস্থায় ইসরায়েলকে খেলায় রাখলে সেটি অন্যায় বার্তা দেবে।
আরো পড়ুন : বিসিবির চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় রাখা হয়েছে বিতর্কিত ১৫ ক্লাবকে।
ইসরায়েল বর্তমানে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে আছে, নরওয়ের চেয়ে ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে। আগামী ১১ অক্টোবর নরওয়ের বিপক্ষে এবং ১৪ অক্টোবর ইতালির বিপক্ষে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। তবে মাঠের লড়াইয়ের আগে রাজনৈতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার আলোচনা ঘিরে রয়েছে অনিশ্চয়তা।