বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত দীর্ঘদিন ধরেই নানা সংকটে জর্জরিত। ডাক্তার-নার্সের ঘাটতি, মানহীন মেডিকেল শিক্ষা এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ সুযোগের অভাবে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিচ্ছেন।
তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ডাক্তারের সংখ্যা জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। পাশাপাশি নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদদের সঠিক অনুপাতও বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশনা অনুযায়ী একজন ডাক্তারের বিপরীতে অন্তত তিনজন নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদের থাকা উচিত। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের অনুপাত এর চেয়ে অনেক কম, যা কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া দেশে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা বাড়লেও মান নিয়ন্ত্রণে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত হাসপাতাল সুবিধা নেই, ফলে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে রোগী দেখার বা বাস্তব প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে না। এতে করে সনদপ্রাপ্ত অনেক চিকিৎসকই প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা ছাড়াই কর্মজীবনে প্রবেশ করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের শিক্ষার মান চিকিৎসা ব্যবস্থার মানকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়া গাজার পাশে দাঁড়াল, ঘোষণা ২৩.৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা
অন্যদিকে, প্রশিক্ষিত নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদের সংকটও পরিস্থিতিকে জটিল করছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকলেও সেগুলোর মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ফলে দেশে দক্ষ জনবল তৈরি না হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা খাত দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে।
স্বাস্থ্যখাতের এই সংকটের কারণে অনেক রোগী বাধ্য হচ্ছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে বা সামর্থ্য থাকলে বিদেশে চলে যেতে। অপরদিকে, ডাক্তার ও নার্সরাও ভালো সুযোগের সন্ধানে বিদেশমুখী হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো ছাড়া এই সংকট কাটানো সম্ভব নয়। জনগণের জন্য সহজলভ্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি মেডিকেল শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।